Kasba Attempt to Murder Case

‘ভয় দেখাতে নয়, মারার জন্যই পাঠিয়েছিলাম’! গত মাসেও সুশান্তকে খুনের ছক কষেছিলেন গুলজ়ার

গ্রেফতারের পর ধৃত শুটার পুলিশের কাছে দাবি করেন, কাউন্সিলরকে ‘ভয় দেখানোর’ জন্য তাঁকে ‘সুপারি’ দেওয়া হয়েছিল, মারার জন্য নয়। তবে গুলজ়ার সেই দাবি উড়িয়ে নতুন কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৫
Share:

তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ এবং (ইনসেটে) গ্রেফতারের পর গুলজ়ার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ফাঁকা আওয়াজ নয়, ‘খেল খতম’ করতেই শুটার পাঠিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় এমনটাই জানিয়েছেন ধৃত আফরোজ় খান ওরফে গুলজ়ার। পাশাপাশি, এর আগেও তিনি কসবার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন বলেও স্বীকার করেছেন। অক্টোবর মাসেই সেই পরিকল্পনা হয়। সেই মতো বিহার থেকে লোক এসে ‘রেইকি’ও করে গিয়েছিলেন। তবে, সে বার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায়, শুক্রবার ছক কষা হয়। পুলিশকে এ কথাও জানিয়েছেন কসবাকাণ্ডের ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। হাতেনাতে ধরা পড়েন ‘শুটার’ যুবরাজ সিংহ। গ্রেফতারের পর ওই তরুণ পুলিশের কাছে দাবি করেন, কাউন্সিলরকে ‘ভয় দেখানোর’ জন্য তাঁকে ‘সুপারি’ দেওয়া হয়েছিল, মারার জন্য নয়। তবে গুলজ়ারের নাকি দাবি, ভয় দেখাতে নয়, মারার জন্যই আততায়ীকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। এমনই খবর তদন্তকারী সূত্রে। গুলজ়ারের দাবি, তিনি যুবরাজদের দু’টি বন্দুক দিয়েছিলেন। যুবরাজ ছাড়াও স্কুটিচালকের কাছেও একটি বন্দুক ছিল।

কেন গুলজ়ার সুশান্তকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে গুলজ়ার জানিয়েছেন, তাঁর জমি দখল করে নিয়েছিলেন কাউন্সিলর-ঘনিষ্ঠ এক প্রোমোটার। সেই বিবাদ থেকেই সুশান্তের উপর রাগ এবং খুনের পরিকল্পনা। আগেও দু’বার একই ভাবে পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

Advertisement

তদন্তকারী সূত্রে খবর, গুলজ়ার জানিয়েছেন, সুশান্তের উপর তাঁর রাগ দীর্ঘ দিনের। আগেও তাঁকে খুন করতে চেয়েছিলেন। সেই মতো বিহার থেকে শুটারও ভাড়া করা হয়। অক্টোবর মাসে শেষ বার এই পরিকল্পনা করেছিলেন গুলজ়ার। ১০ লক্ষ টাকার ‘চুক্তি’ হয়। সে বারও বিহার থেকে লোক আনা হয়েছিল। এসেছিল অস্ত্রও। এ বারের মতো তখনও সুশান্তের গতিবিধি নজর রেখেছিলেন এক জন। সেই মতো খুনের ছক কষা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে সে বার পরিকল্পনা বানচাল হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় কসবায় নিজের বাড়ির সামনে বসে ছিলেন কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত। সেই সময় আচমকাই স্কুটারে চেপে আসেন দু’জন। তাঁদের মধ্যে এক জন স্কুটার থেকে নেমে তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর দু’বার গুলি চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হন। ফের স্কুটারে চেপে পালানোর সময় এক আততায়ীকে ধরে ফেলেন সুশান্ত এবং তাঁর সঙ্গীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। জমি-বিবাদ প্রকাশ্যে এলেও খুনের চেষ্টার অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। সুশান্তের উপর কেন এত রাগ গুলজ়ারের? শুধুই জমি নিয়ে ঝামেলা না কি অন্য কোনও আক্রোশ থেকে বার বার খুনের চেষ্টা করেছেন গুলজ়ার? সে সব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

কসবাকাণ্ডের পর থেকেই ‘ইকবাল’ বলে এক জনের নাম ঘুরপাক খাচ্ছে। কে এই ইকবাল তা নিয়ে তদন্তকারীরাই ধন্দে রয়েছেন। জেরায় যুবরাজ জানিয়েছেন, আফরোজ়ই তাঁর কাছে নিজেকে ইকবাল বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। তবে আফরোজ় দাবি করেছেন, ইকবাল বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। সুশান্তকে খুন করতে প্রথমে তাঁর সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। পুলিশ এই ইকবালের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement