Bomb Squad

কয়েক কোটি টাকা খরচে নতুন পোশাক ও সরঞ্জাম, আধুনিক হবে বম্ব স্কোয়াড

খরচ ধরা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে। নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই আধুনিক সরঞ্জামগুলি বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:২০
Share:

বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াডের সদস্য। —প্রতীকী চিত্র।

শক্তি বাড়ছে কলকাতা পুলিশের বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াডের। ওই বাহিনীর ক্ষমতা বাড়াতে কর্মীদের জন্য অত্যাধুনিক পোশাক থেকে শুরু করে বিস্ফোরক সন্ধানের আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে। নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই আধুনিক সরঞ্জামগুলি বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই শহরের একাধিক হোটেল ও জনবহুল স্থানে বোমা রাখা আছে বলে হুমকি ইমেল পেয়েছিল লালবাজার। সেই তদন্তের মধ্যেই বম্ব স্কোয়াডের আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের বম্ব স্কোয়াডের জন্য ‘বম্ব সাপ্রেশন ব্ল্যাঙ্কেট’, ‘সার্চ সুট’, ‘রিয়েল টাইম ভিউয়িং সিস্টেম’, ‘নন-লিনিয়ার জাংশন ডিটেক্টর’ এবং ‘ইভিডি’ (এক্সপ্লোসিভ ভেপার ডিটেক্টর)-র মতো আধুনিক সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, আপাতত পাঁচটি ‘বম্ব সাপ্রেশন ব্ল্যাঙ্কেট’ কেনা হবে। যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২৫ লক্ষ টাকা। কোথাও বিস্ফোরক বা ওই জাতীয় কিছু পাওয়া গেলে তার উপরে ‘বম্ব সাপ্রেশন ব্ল্যাঙ্কেট’ চাপিয়ে দেওয়া হয়। ওই বিস্ফোরক থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে তার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে এই সমস্ত ব্ল্যাঙ্কেট। বিস্ফোরক উদ্ধারের সময়ে উদ্ধারকারীরাও যাতে সুরক্ষিত থাকেন, তার জন্য দু’টি অত্যাধুনিক ‘সার্চ সুট’ কেনা হচ্ছে। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, বম্ব স্কোয়াডের হাতে এমনিতে ‘সার্চ সুট’ আছে। তবে, এই নয়া ‘সার্চ সুট’ বেশি কার্যকর বলে জানা গিয়েছে। দু’টি ‘সার্চ সুট’ কিনতে প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা খরচ হবে।

এ ছাড়া, ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি ‘রিয়েল টাইম ভিউয়িং সিস্টেম’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। সঙ্গে ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে দু’টি ‘এক্সপ্লোসিভ ভেপার ডিটেক্টর’ বা ইভিডি এবং দু’টি ‘নন-লিনিয়ার জংশন ডিটেক্টর’ কেনা হবে। দু’টি ‘নন-লিনিয়ার জংশন ডিটেক্টর’ কিনতে খরচ হবে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, অত্যাধুনিক এই জিনিসগুলি বিস্ফোরক সন্ধানের পাশাপাশি বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতেও অনেকটা সুবিধা করে দেবে।

Advertisement

জানা গিয়েছে, কোথাও বিস্ফোরক জাতীয় কিছু পাওয়া গেলে সেটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করার পরে নিষ্ক্রিয় করা পর্যন্ত নির্দিষ্ট এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর) মেনে চলতে হয় বম্ব স্কোয়াডকে। বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয় করার গোটা প্রক্রিয়ায় কোনও ভাবেই যাতে বিস্ফোরণ না ঘটে, সে দিকে নজর রাখতে হয় তাদের। অত্যাধুনিক পোশাক থেকে শুরু করে আধুনিক সরঞ্জাম সেই কাজ অনেকটা সহজ করে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। লালবাজার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে। নতুন বছরের আগেই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলে খবর।

গত কয়েক মাসে একাধিক বার বোমাতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরে। বছরের শুরুতেই ভারতীয় জাদুঘরে বোমাতঙ্ক ছড়িয়েছিল। মাসখানেক আগে আর জি করে চিকিৎসক-পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলন চলার সময়ে একটি ব্যাগ ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। কয়েক সপ্তাহ আগে বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরণের হুমকি দিয়ে মেল আসে। শহরের একাধিক হোটেল
বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পর পর এই ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বম্ব স্কোয়াডের গুরুত্ব ও ব্যস্ততা বেড়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বললেন, ‘‘ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে। খুব দ্রুত গোটা প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। আধুনিকীকরণ হলে নিশ্চিত ভাবে বাহিনীর শক্তি বাড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement