ফাইল চিত্র।
ফের অতি ভারী বৃষ্টির ভ্রুকুটি। আবহাওয়া দফতরের কাছ থেকে আগাম হুঁশিয়ারি পেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমারের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন। শহরে জল জমার কারণে বিপর্যয় রুখতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। দুর্যোগ মোকাবিলায় পুরসভার বিভিন্ন দফতরের কী কী করণীয়, তা বিস্তারিত জানিয়ে পুর কমিশনার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ, শনিবার এবং আগামিকাল রবিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ঝড়েরও পূর্বাভাস আছে। দুর্যোগের রেশ চলতে পারে আগামী ২৯ তারিখ পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত পুরসভার সিভিল, নিকাশি, আলো, বিল্ডিং এবং উদ্যান বিভাগের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। শহরের প্রতিটি নিকাশি পাম্পিং স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা বাড়তি নজরদারি এবং সেখানে পর্যাপ্ত পাম্প মজুত রাখতে বলা হয়েছে। গাছ এবং বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়লে, তা দ্রুত সরাতে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের জরুরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরসভার সদর দফতরের কন্ট্রোল রুম থেকেই ২৪ ঘণ্টা শহরের ৭৬টি নিকাশি পাম্পিং স্টেশনে নজরদারি চালিয়ে সব বরোর এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন পুরসভার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা।
গত রবিবার সারা রাতের অতি ভারী বৃষ্টির পরে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ বুধবার পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। জমা জলে চূড়ান্ত নাকাল হয়েছেন শহরবাসী। শহরতলি এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যু হয়েছে। সেই দুর্যোগ কাটতে না কাটতেই ফের প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা। এই অবস্থায় পুরসভার নিকাশি, আলো, উদ্যান, সিভিল এবং বিল্ডিং বিভাগের পদস্থ আধিকারিকদের সিইএসসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাতদিন সমন্বয় রেখে দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
গত ক’দিনের বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে বালিগঞ্জ, পামারবাজার, কালীঘাট এবং মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনে বাড়তি কর্মী রাখতে বলা হয়েছে। পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গত রবিবার থেকে নাগাড়ে বৃষ্টিতে একবালপুর, মোমিনপুর, কালীঘাট, বালিগঞ্জ-সহ এন্টালির পামারবাজার পাম্পিং স্টেশন সংলগ্ন এলাকার জল নামতে বেশ দেরি হয়েছে। এ জন্য ওই সব পাম্পিং স্টেশনে মুখ্যসচিব বাড়তি নজর রাখতে বলেছেন।’’
বৃষ্টির সময়ে গঙ্গা লাগোয়া লকগেটগুলি থেকে জল বেরোয়। জোয়ারের সময়ে সেগুলি বন্ধ রাখতে হয়। না হলে গঙ্গার জল নিকাশি নালা দিয়ে শহরে ঢুকে উল্টো বিপত্তি বাড়ায়। এ জন্য গঙ্গা সংলগ্ন ৯টি লকগেটে প্রয়োজনে বাড়তি কর্মী রেখে প্রতিরোধী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। জমা জল সরাতে প্রতিটি বরোয় যথেষ্ট সংখ্যক ছোট পাম্প মজুত করার কথাও বলা হয়েছে। জল দ্রুত সরাতে গালিপিটের মুখ পরিষ্কার করতে পর্যাপ্ত কর্মী থাকবেন। প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিকটবর্তী স্কুল, কলেজ বা কমিউনিটি হলে আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করবে পুর সচিবালয় দফতর। বিপদ বুঝলে ওই দফতর এনডিআরএফ এবং কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই এলাকায় কর্মী নিয়োগ করবে।