হাওড়ার কদমতলা বাজার। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।
শনিবার ভোরের বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গিয়েছিল ১৫০ বছরের পুরনো মধ্য হাওড়ার কদমতলা বাজার। এর পরেই নড়ে বসল হাওড়া পুরপ্রশাসন।
রবিবার, হাওড়া পুরসভা তিনটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে। প্রথমত, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাজারগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মেয়র রথীন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে দশ জনের একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। তাতে কয়েক জন মেয়র পারিষদ-সহ রয়েছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। ফায়ার লাইসেন্স, পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স এবং সমগ্র বাজারের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে টাস্ক ফোর্স এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে পুরসভার কাছে। তারই ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন পুর কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয়ত, এ দিনই কদমতলা বাজারের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে হাওড়া পুরসভা। তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে পোড়াবাজারের জঞ্জাল সরানোর কাজ দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয়েছে বলে পুরসভার দাবি। যদিও শনিবার রাত থেকেই বাজারের ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেছিল পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
এ দিন সকালে কদমতলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি দিনের তুমুল ব্যস্ততা সরিয়ে পড়ে রয়েছে বাজারের পোড়া কাঠামো। এ দিক, ও দিক পড়ে রয়েছে পোড়া আলু-আনাজ, পোড়া কাপড়ের টুকরো। অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুর-বেড়াল। কিন্তু গন্ধ শুঁকতে এগিয়েও মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। তারই মধ্যে কোথাও আবার ব্যবসায়ীরা অবশিষ্টের সন্ধানে হাতড়ে বেড়াচ্ছেন। পোড়া গন্ধ তখনও তীব্র।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ১০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর নামের তালিকা পুরসভার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কদমতলা ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ শুভাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘পুরসভা দশ লক্ষ টাকা অনুদানের কথা ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার থেকে ব্যবসায়ীরা যাতে ব্যবসা শুরু করতে পারেন সে জন্য অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি পুরসভার কাছে। এর জন্য দ্রুত ১০০টি অস্থায়ী দোকান করে দিতে হবে।’’
মেয়র বলেন, ‘‘ত্রিপল ও বাঁশ পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছি। যাতে দ্রুত বাজার বসানো যায় তার জন্য পুরসভা সব রকম চেষ্টা করবে।’’ এ দিকে হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।