প্রতীকী ছবি।
পুলিশকর্মীদের মারধর, তাঁদের কাজে বাধাদান, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। সেই মামলার বিচারে সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করল আদালত। শিয়ালদহ আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মঙ্গলবার ওই রায় দিয়েছেন। ওই নির্দেশে নিষ্কৃতি পেলেন ১৮ জন অভিযুক্ত। যাঁরা সকলেই ট্যাংরা এলাকার শাসক দলের নেতা বা কর্মী।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের ১৮ অগস্ট সকাল থেকে এলাকার দখল নিয়ে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ট্যাংরা থানার সামনে ডি সি দে রোড। থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বৈশালী মোড়ে ইটের ঘায়ে আহত হন তিন পুলিশকর্মী। লালবাজারের বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উদ্ধার করা হয় বোমা, অস্ত্র। এর পরেই লালবাজারের নির্দেশে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই মামলা রুজু করে পুলিশ। পরে পুলিশ তৃণমূলের স্থানীয় দু’টি গোষ্ঠীর নেতা প্রদীপ গুহ এবং অলোক খাটুয়া-সহ বাকিদের গ্রেফতার করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। বিচার চলাকালীন অভিযুক্তেরা জামিনে ছাড়া পান। প্রদীপ অন্য একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। বর্তমানে তিনি সেই মামলায় জামিনে রয়েছেন।
মঙ্গলবার অভিযুক্তদের আইনজীবী প্রদীপ মুখোপাধ্যায় এবং নবকুমার ঘোষ জানান, তদন্তকারীরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য দিতে পারেননি। এমনকি সাক্ষ্য গ্রহণের সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযুক্তদের চিনতে পারেননি। তদন্তকারীদের ওই গাফিলতির কারণেই অভিযুক্তেরা বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে দাবি আইনজীবীদের। সরকারি আইনজীবী বরুণ দত্ত, এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তদন্তকারীদের দাবি, সাক্ষ্য চলাকালীন ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত প্রদীপ এবং অলোককে চিহ্নিত করেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আদালত রায় দেওয়ার সময়ে সেটি গ্রাহ্য করেননি বলে পুলিশের দাবি।
আদালত এবং পুলিশ সূত্রের খবর, চার বছর আগের ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের হামলা এবং বোমাবাজিতে খোদ পুলিশ জখম হয়েছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা সে দিন ওখানে খণ্ডযুদ্ধ চলে। এর পরেও পুলিশের তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়নি বলে বিচারক জানান। লালবাজার সূত্রের খবর, রায় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।