জামিন পেয়েই আবার হুমকি ও শাসানির অভিযোগ

আতঙ্কের শুরুটা হয়েছিল জানুয়ারি মাসের গোড়ায়। টিটাগড় পাতুলির বাসিন্দা ওই শিশু খেলছিল বাড়ির উঠোনে। কাজে ব্যস্ত ছিলেন তার দিদিমা।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০২:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

অতি পরিচিত পাশের বাড়ির কাকু। তাকে দেখলেই চমকে উঠছে সাড়ে চার বছরের মেয়েটি। সেই কাকু যেখানে-সেখানে, এমনকী, বাড়ি এসেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। মারধর করছে তার মা, দাদু-দিদিমাকে। আতঙ্কে দিন কাটছে গোটা পরিবারের।

Advertisement

আতঙ্কের শুরুটা হয়েছিল জানুয়ারি মাসের গোড়ায়। টিটাগড় পাতুলির বাসিন্দা ওই শিশু খেলছিল বাড়ির উঠোনে। কাজে ব্যস্ত ছিলেন তার দিদিমা। কিছু ক্ষণ পরে দেখা যায়, মেয়েটি উঠোনে নেই। খোঁজাখুঁজি চলার সময়ে পাশের বাড়ি থেকে কান্নার শব্দ শুনে তাকে নিয়ে আসেন দিদিমা। যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তার। বাড়ি ফিরে সে জানায়, পাশের বাড়ির কাকু তার উপরে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে।

শিশুটিকে নিয়ে খড়দহ থানায় যায় তার পরিবার। সেখান থেকে ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে। ৮ জানুয়ারি থানায় অভিযোগ দায়ের করে মেয়েটির পরিবার। সেই রাতেই পুলিশ ঘুটিয়ারি শরিফ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তিন দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায় শিশুটি। তবে মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়েও পায়নি তার পরিবার। তাঁদের বলা হয়েছিল, রিপোর্ট পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

দিন কুড়ি পরে বাড়িতে পুলিশ এসে জানায়, ফের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, আবার পরীক্ষা কেন হবে, তার কোনও জবাব দেয়নি পুলিশ। মেয়েটিকে তারা ফের বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, এত দিন পরে যৌন নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া সম্ভব নয়। নথিতে সেটাই লিখে দেওয়া হয়। এর কয়েক দিন পরে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি জামিনে ছাড়া পায় অভিযুক্ত। অভিযোগ, সেই রাতেই শিশুটির বাড়িতে চড়াও হয় সে। বাড়ির সকলকে বেধড়ক মারধর করে হুমকি দেয়, পুলিশে জানালে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।

ওই শিশুর মা পরিচারিকার কাজ করেন। সারা দিন দাদু-দিদিমার কাছেই থাকে মেয়েটি। তাঁদের অভিযোগ, জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য রোজই তাঁদের বাড়িতে চড়াও হচ্ছে অভিযুক্ত এবং তার পরিবারের লোকেরা। এমনকী, কয়েক হাজার টাকা নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হয় তাঁদের। প্রতিবেশীরা পাশে দাঁড়ানোয় তাঁদেরও অভিযুক্ত হুমকি দেয় বলে অভিযোগ মেয়েটির পরিবারের। তাঁদের আরও অভিযোগ, ফের পুলিশের কাছে গেলেপুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে তারাও টাকা নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলে। এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে পুলিশ।

শেষ পর্যন্ত ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয় পরিবারটি। তাঁর সঙ্গে দেখা করে পুরো ঘটনা জানান মেয়েটির মা। পুলিশ কমিশনার রাজেশ সিংহ ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দেন। তবে মেয়েটির মা জানান, গত কয়েক দিনে ঘরে চড়াও হয়ে মারধর বন্ধ হলেও, রাস্তায় বেরোলে হুমকি-শাসানি চলছে আগের মতোই। এ প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘আমি মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্ত নাবালক বলে জামিন পেয়ে গিয়েছে। পুলিশ আইন মোতাবেক যা পদক্ষেপ করার করছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement