Man Beaten

Businessman Beaten: ব্যবসায়ীকে মারধরে লঘু ধারা কেন, উঠছে প্রশ্ন

তোলা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে ব্যাট, উইকেট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের সামনে ফেলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২২ ০৮:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

তোলা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে ব্যাট, উইকেট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের সামনে ফেলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সোমবার বেলেঘাটার সেই ঘটনায় নাম জড়ানো মূল অভিযুক্তরাজু নস্কর কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত অধরা। ফলে, মঙ্গলবার দু’জন গ্রেফতার হলেও রাজু ধরা না পড়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এক পুলিশকর্তা রাজুর খোঁজে তল্লাশির কথা বললেও তাঁর রাজনৈতিক প্রভাবকেই ধরা না পড়ার কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা।

Advertisement

এ দিকে, ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন রাজু। যদিও এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে যে, তাঁর বিরুদ্ধে এই প্রথম অভিযোগ উঠল, এমনটা নয়। তোলাবাজি, বোমাবাজি, গুলি চালানো-সহ একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত রাজু বেলেঘাটায় ‘বাহুবলী’ হিসেবেই পরিচিত। জমির দালালি থেকে প্রোমোটিং— সবেতেই তাঁর লম্বা হাত থাকে বলে অভিযোগ। বছর দুয়েক আগে বেলেঘাটার এক ক্লাবে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছিল রাজুর। সে বার সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণের দাবি করা হলেও তা খারিজ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।

এ বার সেই রাজু গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে ওই ব্যবসায়ী, অনির্বাণ সাহার পরিবার। তাঁর স্ত্রী পাপড়ি সাহার দাবি, ‘‘ধৃতদের বিরুদ্ধে লঘু ধারা প্রয়োগ করায় আমরা বিস্মিত। আমার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করার পরেও খুনের চেষ্টার (৩০৭) ধারা যোগ হয়নি! সেই জন্য আমাদের আইনজীবীকে আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। মনে হচ্ছে, পুলিশই দোষীদের আড়াল করছে!’’ পাশাপাশি, তিনি পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের শরণাপন্ন হবেন বলেও এ দিন জানান।

Advertisement

দোকান সারানো বাবদ তিন লক্ষ টাকা তোলা না দেওয়ায় বেলেঘাটার উড়িয়াবাগান এলাকায় বছর পঁয়তাল্লিশের ব্যবসায়ী অনির্বাণকে মারধরের অভিযোগ ওঠে সোমবার। তাঁর পরিবারের দাবি, রাজুর দলবল দোকানের সামনে থেকে ওই ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। এর ঘণ্টা দুয়েক পরে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালের সামনে তাঁকে ফেলে দিয়ে যায়। পরিবারের তরফে রাজু-সহ একাধিক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, ওই ব্যবসায়ীর শরীরের একাধিক জায়গায় ব্যান্ডেজ বাঁধা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আপাতত স্থিতিশীল হলেও আতঙ্ক এখনও কাটেনি তাঁর। বিছানায় শুয়ে তিনি বলেন, ‘‘দোকান সংস্কারের জন্য অগ্রিম টাকা না দেওয়ায় রাজুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে আমাকে মারধর করে।’’

অনির্বাণের আরও অভিযোগ,‘‘হাসপাতালের পুলিশ ইনফরমেশন কেস শিটে লেখা রয়েছে, রাজু নস্কর নাকি আমাকে ভর্তি করিয়েছেন। সম্পূর্ণ মিথ্যা। মারধরের পরে গাড়িতে করে হাসপাতালের সামনের ফুটপাতে আমাকে নামায় রাজু ও তার দলবল। পরে হাসপাতাল থেকে হুইলচেয়ার বার করে তাতে আমাকে বসিয়ে রেখে চলে যায় ওরা। পরে অন্য কেউ ভর্তি করে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাজু নস্কর নিজে বাঁচতে ভর্তির জায়গায় ওর নাম লিখিয়েছে। যাতে প্রমাণ করা যায়, যে মারধর করে, সে-ই ভর্তি করাতে পারে না। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মেলালেই প্রমাণ হবে, রাজু আমাকে ভর্তি করায়নি।’’

এই প্রসঙ্গে এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পলাতক বাকি অভিযুক্তদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement