রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নারদ তদন্তের জাল গোটাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। প্রাক্তন মন্ত্রী ও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তির হদিশ পেতে এবার ইডি-র নজরে ‘জিসিআর’ কোম্পানি। শোভন সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, অন্য দু’জনকে সঙ্গী করে ওই কোম্পানি তাঁর স্ত্রী বানিয়েছিলেন। শোভন আরও দাবি করেন, ওই কোম্পানির অন্যতম ‘সদস্য’ ছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে চিকু। এ বার সেই অভিজিৎকেই তলব করল ইডি।
ইডি আধিকারিকদের দাবি, নারদ মামলায় আর্থিক তছরূপের তদন্তেবেশ কিছু নাম উঠে এসেছে। তাঁরা কোনও ভাবে অবৈধ লেনদেনে জড়িত কিনা, তা জানার চেষ্টা করছেন ইডি আধিকারিকেরা। সে কারণেই একদিকে যেমন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’দের জেরা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তেমনই তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের ‘পরিচিত’দেরও তলব করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই দু’দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে শোভনের ‘বিপদের বন্ধু’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবার রত্নার ‘পরিচিত’ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জেরা করতে চায় ইডি।মেয়র এবং মন্ত্রিত্বের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ‘জিসিআর’ কোম্পানি তৈরি করা নিয়ে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন শোভন। তাঁকে না জানিয়েই নাকি ওই কোম্পানি তৈরি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: অসমে তৃণমূলের ভরাডুবি, বাঙালি এলাকাতেও প্রায় সর্বত্র হার
কেন কোম্পানির নাম ‘জিসিআর’ হয়েছিল, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন শোভন। তাঁর দাবি, জিসিআর মানে গোপাল-চিকু-রত্না। সেই সূত্র ধরেই ‘চিকু’কে তলব। কিন্তু অভিজিৎ এই কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি এই কোম্পানির কিছুই জানি না। কোম্পানির কোনও পদেও নেই। মাননীয় প্রাক্তন মেয়র আমার নামের সঙ্গে কোম্পানির নাম জুড়ে দিয়েছেন। যেটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। রত্নাদিকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। অহেতুক আমাকে জড়ানো হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: শহরে ফের এটিএম স্কিমিং, এবার শিকার পুলিশকর্মী
ইডি সূত্রে খবর, আগামী সোমবার তাঁকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে বলা হয়েছে। ওই সপ্তাহে ইডি দফতরে যাওয়ার কথা রত্না চট্টোপাধ্যায়ের। কিছু দিন আগে রত্নাকে তলব করা হয়। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগত কারণে হাজিরা হতে পারেননি। ইডি অফিসারদের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছেন।
এরই মধ্যে শোভনের বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’দিন জেরা করে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করার পরই রত্না এবং অভিজিৎকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য পেতে চাইছেন ইডি আধিকারিকেরা। এ বিষয়ে রত্না বলেন, “আমি জিসিআর-এর বিষয়ে আগেই ইডিকে জানিয়েছি। আমি কোনও অনৈতিক কাজে যুক্ত নেই। ফলে ইডি ডাকলেই আমি যাব।” একই বক্তব্য অভিজিতেরও। তাঁর কথায়: “আমাকে ইডি দফতরে যেতে বলা হয়েছে। নিশ্চয়ই যাব।”