অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী সংঘর্ষে জখম ১৪ তৃণমূল কর্মীকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে গেলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ এসএসকেএমে ঢোকেন অভিষেক। বেশ খানিক ক্ষণ আহত কর্মীদের সঙ্গে কাটান তিনি। তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে আহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর অভিষেক যান উডবার্ন ব্লকে। সেখানেও এক তৃণমূল কর্মী চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে খবর।
গত বুধবার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ভেকুটিয়া অঞ্চল। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের কর্মীদের উপর বিনা প্ররোচনায় হামলা চালায় বিজেপি। যদিও নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন। এর পর বৃহস্পতিবার মোট ১৪ জন জখম তৃণমূল কর্মীকে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে যখন আহতদের ভর্তি করানো হয়, তখন সেখানে ছিলেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা নন্দীগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কুণাল ঘোষ।
আহতদের দেখে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি ১৪ জনের সঙ্গেই দেখা করেছি। কথা বলেছি। বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে নন্দীগ্রামে। মহিলাদেরও বিজেপি ছাড়েনি। ছোটদের রেয়াত করেনি।’’ অভিষেক বেশ কয়েক জন ‘অভিযুক্তের’ নাম করে বলেন, ‘‘আমি এখান থেকে ২০ জনের নাম নিয়ে যাচ্ছি। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে নামগুলো দেব।’’ তিনি বিচার-ব্যবস্থার একাংশকেও আক্রমণ করেন। বলেন, ‘এমন জাজমেন্ট দেওয়া হচ্ছে যে শুভেন্দু অধিকারী যদি অপকর্ম করেন, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাবে না। এ ভাবে রাজ্য প্রশাসনের হাত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।’’
বস্তুত, নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে ছিল বিজেপি। অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসনটিও বিজেপির দখলে গিয়েছে। অন্য দিকে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল দখল নিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বাংলার ভরকেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। কারণ, সেখানে বিজেপি প্রার্থী করে সদ্য তৃণমূলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীকে। তৃণমূলের তরফে প্রার্থী হন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত জয়ী হন শুভেন্দু। যদিও ভোটের গণনাপ্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ করে আদালতে যায় তৃণমূল। সেই মামলা এখনও চলছে। সেই থেকে রাজনৈতিক ভাবে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। পঞ্চায়েত ভোটেও বার বার দু’পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে হলদি নদীর পাশের এই জনপদ। দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ করছে।