প্রতীকী ছবি।
ভরদুপুরে মিনিটখানেক আগেই ছেড়ে গিয়েছে কবি সুভাষগামী মেট্রো। প্ল্যাটফর্মে তখনও কিছু যাত্রী পরের ট্রেনের অপেক্ষায়। ঠিক তখনই আচমকা লাইনে নেমে পড়লেন বছর ঊনত্রিশের এক যুবক। তাঁকে লাইনে নেমে হাঁটতে দেখে আতঙ্কে চিৎকার করে উঠলেন অন্য যাত্রীরা। হইচই শুনে ছুটে এলেন আরপিএফ কর্মীরা। তড়িঘড়ি ওই যুবককে টেনে প্ল্যাটফর্মে তোলার চেষ্টা করতেই প্রবল ভাবে বাধা দিতে শুরু করলেন তিনি। কোনও মতে তুলে আনার পরে দেখা গেল, ওই যুবকের সারা শরীর কাঁপছে। বাঁচতে চান না বলে আর্তনাদ করছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়েন দমদম মেট্রো স্টেশনের কর্মী ও যাত্রীরা। পরে ওই যুবককে আরপিএফের বুথে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, পারিবারিক সমস্যার কারণেই তিনি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। পরে পুলিশের সাহায্য নিয়ে পরিবারের লোকজনের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ওই যুবককে।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল রক্ষী বাহিনীর কর্মীদের তৎপরতার কারণেই এ দিন ওই যুবককে বাঁচানো গিয়েছে। লাইনে হাঁটার সময়ে ওই যুবক কোনও ভাবে থার্ড রেলের সংস্পর্শে এলে বড়সড় অঘটন ঘটে যেতে পারত। অল্পের জন্য সেই বিপত্তি এড়াতে পেরে হাঁফ ছেড়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
মেট্রো সূত্রের খবর, কালো ট্রাউজ়ার্স ও হাল্কা সবুজ রঙের ফুলহাতা শার্ট পরা ওই যুবক এ দিন দুপুর ১২টার কিছু আগে দমদম মেট্রো স্টেশনে আসেন। তাঁর লাইনে নামার ঘটনার মিনিটখানেক আগেই বেরিয়ে যায় কবি সুভাষগামী মেট্রো। তবে ওই যুবক যখন লাইনে নামেন, তখন কোনও দিকেরই কোনও ট্রেন ছিল না। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, পারিবারিক নানা কারণে ওই যুবক অবসাদে ভুগছেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। সম্প্রতি সেই কাজ চলে যায় বলেও একটি সূত্রের খবর। তবে, মেট্রো সূত্রে এই তথ্যের কোনও সমর্থন মেলেনি।
ওই যুবক পরে জানান, তাঁর বাড়ি খড়দহে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাঁকে উদ্ধার করার পরে সিঁথি থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে তাঁকে নিয়ে যায়। পরে সিঁথি থানার পুলিশই ওই যুবককে তাঁর পরিবারের লোকজনের কাছে ফিরিয়ে দেয়। এ প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আরপিএফ কর্মীরা সতর্ক থাকায় বড় কোনও বিপত্তি ঘটেনি। দ্রুত ওই যুবককে উদ্ধার করতে পারায় ট্রেন চলাচলেও কোনও বিঘ্ন ঘটেনি।’’