প্রতীকী ছবি।
প্রায়ই বাড়িতে অশান্তি হত। আত্মীয় ও পরিচিতদের মাঝেমধ্যে তা বলতেনও বছর চল্লিশের গৃহবধূ। এই সবের মধ্যেই প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে খবর আসে, রেললাইনের ধারে ওই মহিলা ও তাঁর সাত বছরের মেয়ের দেহ মিলেছে। তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তি সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন কাঞ্চনা বিশ্বাস এবং তাঁর মেয়ে। বেলঘরিয়ার এই ঘটনায় কাঞ্চনার স্বামী বিশ্বনাথ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে দমদম রেল পুলিশ। অন্য দিকে, ওই বধূর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করার অভিযোগে তাঁর শাশুড়ি এবং দুই ননদকে গ্রেফতার করেছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলঘরিয়ার চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বনাথবাবু বেসরকারি সংস্থার কর্মী। কয়েক বছর আগে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁশবেড়িয়ার কাঞ্চনার। ওই দম্পতির মেয়ে বেলঘরিয়ারই একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই কাঞ্চনার উপরে অত্যাচার চালাতেন তাঁর শাশুড়ি ও ননদেরা। তাতে সঙ্গ দিতেন বিশ্বনাথ। এলাকায় মিশতে দেওয়া হত না কাঞ্চনাকে। আরও অভিযোগ, সকলের কাছে ‘রাগি বৌমা’ বলে কাঞ্চনার নামে কটূক্তি করতেন শাশুড়ি ও ননদেরা। মেয়ের স্কুলের বন্ধুদের মা-বাবার কাছে সমস্যার কথা মাঝেমধ্যে বলতেন ওই বধূ।
কাঞ্চনার এক আত্মীয় প্রতাপ দাস বলেন, ‘‘১২-১৩ বছর ধরে অশান্তি চলছে ওঁদের পরিবারে। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ পুলিশ জানায়, ২৬ জানুয়ারি সকালে খবর আসে, বেলঘরিয়া স্টেশনের কাছে ২ ও ৩ নম্বর রেলগেটের মাঝে পড়ে আছে ওই মহিলা ও তাঁর মেয়ের দেহ।
বিশ্বনাথবাবু আত্মীয়দের কাছে দাবি করেছেন, তিনি ওই দিন ভোরে কাজে শ্রীরামপুরে গিয়েছিলেন। ফেরার সময়ে প্রতিবেশীদের থেকে বিষয়টি জানতে পারেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাঞ্চনার শাশুড়ি ও দুই ননদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য দিকে, মামলা দায়ের করে বিশ্বনাথকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ।