বিধ্বংসী: আগুনের গ্রাসে ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ অ্যাভিনিউ সংলগ্ন গোটা বস্তি, নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলের লড়াই
খবরটা যখন পেলাম, আমি তখন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আমার স্বামী সেখানে ভর্তি আছেন। কয়েক দিন আগেই ওঁর পেটের অস্ত্রোপচার হয়েছে। ছোট ছেলে দৌড়ে এসে খবর দিল, আমাদের বস্তিতে আগুন লেগেছে। শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু ভেবেছিলাম, এমন আগুন তো কতই লাগে। দমকল ঠিক নিভিয়ে দেবে। এর কিছু পরে পাড়ায় গিয়ে যে দৃশ্য দেখলাম, তাতে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না! আমার চোখের সামনেই রাক্ষুসে আগুনে সব শেষ! কিচ্ছু বাঁচাতে পারলাম না।
বস্তির আরও অনেকের মতো আমার বড় ছেলেও প্রথম দিকে বালতি দিয়ে জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওই আগুন কি আর বালতির জলে নেভে! চিৎকার করে ছেলেকে সরতে বলছিলাম। সর্বস্ব তো চলেই গেল। ছেলেটার যেন ক্ষতি না হয়, সেটাই তখন মাথায় ঘুরছিল।
আমার স্বামী পেশায় দিনমজুর। আমি বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করি। কষ্টেসৃষ্টে কোনও মতে সংসার চলে। জমানো যেটুকু ছিল, সব শেষ! আমার স্বামী অসুস্থ। আরও বেশ কিছু দিন কাজ করতে পারবেন না। আমি শুধু ভাবছি, আমার এখন চলবে কী করে? এই শীতের রাতে ছেলে দুটোকে নিয়ে থাকবই বা কোথায়? মাথা গোঁজার ঠাঁই আবার কবে জোগাড় হবে, জানি না। স্বামীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়লে কোথায় এনে রাখব, সেটা ভেবেই তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে। ওকে তো আর খোলা আকাশের নীচে শুতে দিতে পারব না। আজকের এই বিপর্যয়ের জন্য কিন্তু দমকলও কিছুটা দায়ী। দমকল কেন্দ্র আমাদের বস্তি থেকে বেশি দূরে নয়। কিন্তু ওদের পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়।
সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সাগরিকাদেবী।— নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: বায়ুসেনার জন্য দেশীয় যুদ্ধবিমান তেজস কিনতে বরাদ্দ ৪৮ হাজার কোটি
আরও পড়ুন: পরীক্ষা কমলেও বাড়ল সংক্রমণের হার, অস্বস্তি উত্তর ২৪ পরগনা নিয়ে