বালিকার যৌন হেনস্থা, ভিডিয়ো করে বিতর্ক

পুলিশ জানিয়েছে, নারায়ণ ভট্টাচার্য নামে বছর আটষট্টির ওই গৃহশিক্ষককে সোমবার রাতেই পকসো (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

এগারো বছরের ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে এক গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ঘটনাটি দেখে ওই গৃহশিক্ষকের এক প্রতিবেশী তা মোবাইলে ভিডিয়ো তুলে রেখেছিলেন। তিনি ও অন্য এক প্রতিবেশী মিলে পুলিশকে ডেকে সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। যদিও ওই বালিকাকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে দেখার সময়ে বাধা না দিয়ে কেন তিনি ভিডিয়ো তুলছিলেন প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, নারায়ণ ভট্টাচার্য নামে বছর আটষট্টির ওই গৃহশিক্ষককে সোমবার রাতেই পকসো (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে গ্রেফতার করা হয়। নেতাজিনগর থানা এলাকার ওই ঘটনা প্রসঙ্গে তদন্তকারীরা জানান, বালিকাটি ওই গৃহশিক্ষকের বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল। তার কুকীর্তি খোলা জানলা দিয়ে প্রথমে দেখতে পায় গৃহশিক্ষকেরই প্রতিবেশী অন্য একটি বাচ্চা। সেই ঘটনাটি দেখে প্রথমে সোমনাথ ঝা নামে এক ব্যক্তিকে সে জানায়।

সোমনাথবাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই গৃহশিক্ষকের ঘরের দরজা বন্ধ পান। এর পরে তিনি পাশের বাড়ি থেকে ঘটনাটির ভিডিয়োয় তোলেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য ওই বালিকার পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। পুলিশ জানায়, সোমনাথবাবু এবং ইন্দ্রনীল বসু নামে ওই গৃহশিক্ষকেরই দুই প্রতিবেশী তার বিরুদ্ধে নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ভিডিয়োটি দেখার পরেই ওই গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

যদিও যাঁরা জুভেনাইল জাস্টিস কিংবা পকসো আইন নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা মনে করছেন দুই পড়শিও আইন বিরুদ্ধ কাজই করছেন। তাতে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট লঙ্ঘন হয়েছে। উচিত ছিল ভিডিয়ো না তুলে আগে ওই বালিকাটিকে উদ্ধার করা। কলকাতা জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘সাধারণত আইন বলছে কোনও বালিকাকে যৌন নিগ্রহ করছেন এমনটা কেউ দেখার পরেও বালিকাটিকে উদ্ধার না করে তার ছবি তোলেন, তবে সেটা বেআইনি।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও যাঁরা ভিডিয়ো তুলেছিলেন তাঁদের পাল্টা দাবি, ‘‘আমরা প্রমাণ হিসাবে ভিডিয়ো তুলেছি। না হলে পুলিশ কী ভাবে বিশ্বাস করত। ওর বাবা-মাই তো প্রথমে বিশ্বাস করছিলেন না!’’ সোমনাথবাবুদের দাবি, তাঁরা পকসো আইনের নিয়ম-কানুন জানেন না। পুলিশ জানিয়েছে, যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া ওই বালিকার পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত ওই গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

পকসো মামলা নিয়ে কাজ করেন এমন একাধিক পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, সোমনাথবাবুরা ওই যৌন হেনস্থার ভিডিয়ো না তুলে সাক্ষী হয়ে অভিযোগ জানালেও পকসো ধারায় মামলা নিতে বাধ্য হত পুলিশ। ওই পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন, বছর এগারোর মেয়ে কথা বলতে পারে। সুতরাং তার সঙ্গে কী হয়েছে

সে ঘটনার বিবরণ সে নিজেও পুলিশকে দিতে পারত। ফলে এ ক্ষেত্রে ভিডিয়ো না তুললেও ওই বালিকার বয়ানের ভিত্তিতেই পুলিশ মামলা রুজু করতে বাধ্য হত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement