প্রতীকী ছবি।
অনলাইনে ক্লাস করতে না-পারায় সম্প্রতি কেরলে আত্মঘাতী হয়েছে এক স্কুলছাত্রী। এ বার তেমনই ঘটনা ঘটল বালির রাজচন্দ্রপুরে। সেখানকার একটি বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বছর ষোলোর এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মোবাইল খারাপ হওয়ায় অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারছিল না ওই ছাত্রী। পরীক্ষায় ফেল করার আশঙ্কায় মনমরা হয়ে থাকত সে।
পুলিশ জানায়, ওই ছাত্রীর নাম শিবানী কুমারী (১৬)। সে বালিরই একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় ক্লাস হচ্ছিল অনলাইনে। কিন্তু মোবাইল খারাপ হয়ে যাওয়ায় শিবানী সেই ক্লাসে যোগ দিতে পারছিল না। অন্য দিকে তার বাবা, মা ও ভাই বিহারের সমস্তিপুরে দেশের বাড়িতে গিয়ে লকডাউনের কারণে আটকে পড়েছিলেন। রাজচন্দ্রপুরের প্রফুল্লনগরে দাদা শুভমের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত শিবানী। বৃহস্পতিবার বিকেলে শুভম কাজে বেরিয়ে ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ফিরে তিনি দেখেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বারবার ডেকেও বোনের সাড়া পাননি শুভম। এর পরেই তিনি বাড়িওয়ালাকে ডাকেন। সকলে মিলে দরজা ভাঙতেই দেখা যায়, জানলা থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে শিবানী।
মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে বালিতে এসে পৌঁছন শিবানীর বাবা সেন্টু সাউ। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েকে রোজ বলতাম, মন দিয়ে পড়াশোনা কর। বলেছিল, মোবাইল খারাপ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। লকডাউনে দেশের বাড়িতে আটকে না-পড়লে মেয়েটাকে একটা মোবাইল কিনে দিতামই।’’
শুভম জানান, দিন দশেক ধরে কারও সঙ্গেই কথা বলছিল না তাঁর বোন। সব সময়ে পরীক্ষায় পাশ না করার আতঙ্কে থাকত। শুভম বলেন, ‘‘অনলাইনে ক্লাস করতে না-পারায় খুব ভেঙে পড়েছিল। বোঝাতাম, বাবা ফিরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বোন বুঝল না।’’