Ragging

ভিন্ রাজ্যের হস্টেলে র‌্যাগিংয়ের শিকার বরাহনগরের কিশোর

যে পড়ুয়া ছবিটি পাঠিয়েছিল, তাকে ফোন করে ওই ব্যক্তি জানতে পারেন, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা বেধড়ক মারধর করেছে তাঁর ছেলেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোরে এসেছিল ছেলের ফোন। তখনই সে বাবাকে জানিয়েছিল, ছাত্রাবাসের উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা মারধর করেছে তাকে। এর পরেই কেটে যায় লাইন। কয়েক ঘণ্টা পরেই হোয়াটসঅ্যাপে আসা ছবি দেখে চমকে ওঠেন বাবা। দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে ছেলে।

Advertisement

যে পড়ুয়া ছবিটি পাঠিয়েছিল, তাকে ফোন করে ওই ব্যক্তি জানতে পারেন, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা বেধড়ক মারধর করেছে তাঁর ছেলেকে। লোহার রড দিয়ে মারার পাশাপাশি জানলার কাচ ভেঙে শরীরে এবং মাথায় আঘাত করা হয়েছে। বিষয়টি জেনে শনিবার দুপুরেই বিশাখাপত্তনমে ছেলের কাছে রওনা দেন বরাহনগরের বাসিন্দা বিজয় মাহাতো।

ডানলপ সকেতনগরের বাসিন্দা বিজয়ের ছেলে শ্যাম নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়েই ভর্তি হয়েছিল বিশাখাপত্তনমের শ্রীচৈতন্য অ্যাকাডেমিতে। সেখানকার ছাত্রাবাসেই থাকত ওই কিশোর। তার মা মুন্নিদেবী জানান, এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ বাবাকে ফোন করে শ্যাম। ছেলে জানায়, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রেরা তাদের হোমওয়ার্ক ওদের দিয়ে জোর করে করাত। কিন্তু তা করতে রাজি না হওয়ায় ভোরে ওই পড়ুয়ারা এসে শ্যাম-সহ আরও কয়েক জনকে চড়-থাপ্পড় মারে বলে অভিযোগ। মুন্নিদেবী বলেন, ‘‘বেলায় স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলব বলেছিলাম। এর পরেই ফোন কেটে যায়, আর কথা হয়নি।’’

Advertisement

শ্যামের খুড়তুতো দাদা আকাশ জানান, সকাল ৮টা নাগাদ বিজয়বাবুর মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ আসার পরে জানা যায় পুরো ঘটনা। ভোরে বাবাকে জানানোর পরে শ্যাম ও অন্যেরা মিলে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানায়। সকাল সাতটা নাগাদ বন্ধুরা টিফিন খেতে গেলেও একাই ছাত্রাবাসের ঘরে ছিল শ্যাম। তখনই অভিযুক্ত পড়ুয়ারা এসে তাকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। চিৎকার শুনে বন্ধুরা এসে শ্যামকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ছবি তুলে বিজয়বাবুকে পাঠায়।

আকাশ বলেন, ‘‘ওই ছবি দেখার পর থেকে বার তিরিশেক স্কুলে ফোন করা হয়েছে। কেউ ধরেননি। অধ্যক্ষ, ওয়ার্ডেন একটা সময়ের পরে ফোন বন্ধ করে দেন। শেষে বিশাখাপত্তনম সিটি পুলিশের কাছে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করি।’’ অন্য দিকে, শ্যামের বন্ধুরাই তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় বিজয়বাবুকে। আকাশের দাবি, টাকা জমা না দেওয়ায় প্রথমে চিকিৎসা শুরু করতে রাজি হননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তখন বিজয়বাবুরা ওই হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে বার বার আবেদন করার পরেই শ্যামের চিকিৎসা শুরু হয়। দুপুরের উড়ানেই বিশাখাপত্তনমের উদ্দেশে রওনা দেন বিজয়বাবু ও অন্যেরা। রাতে জানা গিয়েছে, শ্যাম আপাতত সুস্থ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement