সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ৭০ বছরে প্রকাশ পাবে এই ডাকটিকিটই। —ফাইল চিত্র।
স্কুলের সব পড়ুয়ারা চিঠি লিখবে নিজেদের বাড়ির ঠিকানায়। মা, বাবা অথবা কোনও অভিভাবককে। শ্রেণিভিত্তিক সেই চিঠির বিষয়ও হবে ভিন্ন ভিন্ন। স্কুলে অস্থায়ী ভাবে তৈরি ডাকবাক্সে সেই চিঠি ফেললেই তা পৌঁছে যাবে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের কাছে।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ডাক বিভাগের সহযোগিতায় কাল, মঙ্গলবার প্রকাশিত হচ্ছে বিশেষ ডাকটিকিট। সেটি প্রকাশের সঙ্গেই এমন অভিনব চিঠি লেখার আয়োজন করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। যে খামে ওই চিঠি পোস্ট করবে পড়ুয়ারা, তার উপরেই সাঁটা থাকবে সদ্য প্রকাশিত সাউথ পয়েন্টের ডাকটিকিট। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্কুলে ডাকটিকিট প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ডাক বিভাগের কর্তারাও।
সাউথ পয়েন্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানির মতে, মোবাইলের যুগে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের রমরমার কারণে চিঠি লেখা আজ লুপ্তপ্রায়। আজকের খুদেরা অনেকে হয়তো জানেই না, কী ভাবে একটা হাতে লেখা চিঠি এক সময়ে পৌঁছে যেত দূরের কোনও ঠিকানায়, প্রিয় মানুষের কাছে। ভারতীর ডাক বিভাগ বছরের পর বছর ধরে সেই হাতে লেখা চিঠি পৌঁছে দিত নির্দিষ্ট ঠিকানায়। কী ভাবে সেই কাজ হত, তা-ও সে দিন পড়ুয়াদের বোঝানো হবে। এর পরে তাদের বলা হবে, কোনও প্রিয়জনের উদ্দেশে চিঠি লিখতে। সেই চিঠি স্কুলেই অস্থায়ী ডাকবাক্সে ফেলবে পড়ুয়ারা। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘শুধু ডাকটিকিট প্রকাশ হলে পড়ুয়ারা হয়তো এর গুরুত্ব তেমন ভাবে বুঝতে পারত না। তা-ই এই উদ্যোগ।’’
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়াদের চিঠি লেখার বিষয়ও হবে আলাদা। সব চেয়ে ছোট পড়ুয়ারা, যারা সদ্য লিখতে শিখছে, তারা পাতায় রং দিয়ে ছবি আঁকবে। সেই ছবি খামে ভরে, ডাকটিকিট লাগিয়ে পাঠানো হবে সেই পড়ুয়ার মা-বাবা বা অভিভাবককে। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা সারা দিন স্কুলে কী করে, স্কুল কেন তাদের ভাল লাগে— এই সব নিয়ে চিঠি লিখবে। আর স্কুল তাদের কী ভাবে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করছে, চরিত্র গঠনের জন্য স্কুলে কী ধরনের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হয়— তা হল ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের চিঠির বিষয়বস্তু। নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা আবার লিখবে, দু’বছরের করোনাকালে তারা কী কী শিক্ষা পেয়েছে, যা তাদের আরও অভিজ্ঞ করে তুলেছে। তার জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছতে স্কুল কী ভাবে সাহায্য করছে, তা-ও লিখতে পারে তারা।
কৃষ্ণ জানান, প্রায় ১২ হাজার পড়ুয়া নতুন ডাকটিকিট ব্যবহার করে চিঠি লিখবে। সেই চিঠি যেমন তার মা-বাবার কাছে প্রিয় হবে, তেমনই ভবিষ্যতে পড়ুয়ার কাছেও সেটি মূল্যবান দলিল হয়ে থাকবে।