কলকাতা স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণ এবং যাত্রী পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনার জন্য কলকাতা বিমানবন্দরের ধাঁচে এ বার বিশেষ অ্যাপ চালু করা হল কলকাতা স্টেশনে। পাইলট প্রকল্প হিসাবে চালু হওয়া এই ব্যবস্থায় স্টেশনের কোথাও পরিষেবামূলক সমস্যা চোখে পড়লে যে কেউ সেই সমস্যার কথা অ্যাপ মারফত সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানাতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তাদের কানে পৌঁছবে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করার জন্য।
এর ফলে কোনও অভিযোগ জানানোর জন্য আধিকারিকদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি বা ইমেল চালাচালি করতে হবে না। ফোনে আলাদা করে সমন্বয় রক্ষা করার প্রয়োজনও পড়বে না। পরিবর্তে, অভিযোগ জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুপারভাইজ়ারের মোবাইলে সতর্কবার্তা এসে পৌঁছবে। যাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অ্যাপ খুলে তৎক্ষণাৎ ওই সমস্যার কথা জানতে পারেন। এর পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি কী পদক্ষেপ করলেন বা সমস্যা মেটানো গেল কি না, তা জানাতে হবে ওই আধিকারিককে। সমস্যা না মিটলে কিংবা অভিযোগ পেয়েও উপেক্ষা করলে সেই অভিযোগ পৌঁছবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। রেল সূত্রের খবর, স্টেশনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচ্ছন্নতা, টিকিট সংরক্ষণ, ট্রেন চলাচল-সহ প্রায় ১২ রকম কাজের সাতশোরও বেশি সমস্যাকে অ্যাপের নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকার সমস্যা থেকে শুরু করে স্বয়ংক্রিয় টিকিট ভেন্ডিং মেশিন খারাপ হওয়া কিংবা চলমান সিঁড়ি কাজ না করা— এমন নানা ধরনের সমস্যা ওই অ্যাপে রয়েছে। যাত্রীরা কেউ অভিযোগ জানাতে চাইলে তাঁদের অবশ্য অ্যাপ ডাউনলোড করার প্রয়োজন হবে না। স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় বসানো কিউআর কোড স্ক্যান করেই তাঁরা নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানাতে পারবেন।
ওই অ্যাপের নির্মাতা সারঙ্গ মজুমদার জানান, কোনও যাত্রী লাউঞ্জে গিয়ে হয়তো দেখলেন, বাতানুকূল ব্যবস্থা কাজ করছে না। তিনি কিউআর কোড স্ক্যান করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। দরকার হলে আপলোড করা যাবে ছবিও। উল্লেখ্য, কলকাতা স্টেশন থেকে ঢাকা এবং খুলনাগামী ট্রেন ছাড়ায় এই স্টেশনটি বহু দিন ধরেই আন্তর্জাতিক টার্মিনাল। বর্তমানে ওই স্টেশন থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী সফর করেন।
সারঙ্গ বলেন, ‘‘কী ধরনের অভিযোগ বেশি আসছে, অ্যাপ থেকে তার ধারণা পাওয়া সম্ভব। নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানে কে কতটা তৎপর, সেই তথ্যও মিলবে।’’ কলকাতা স্টেশনে এই ব্যবস্থায় ৭০ শতাংশের বেশি অভিযোগ ‘রেল মদত’ অ্যাপে পৌঁছনোর আগেই নিষ্পত্তি হচ্ছে।