কলকাতা ট্রাম পরিষেবার ১৫০ বছর উপলক্ষে সাজানো ট্রামে খুদেরা। শুক্রবার, এসপ্লানেডে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
ট্রামের সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানের সূচনার দিনেও ট্রামরাস্তার প্রসার নিয়ে আশার কথা শোনা গেল না পরিবহণমন্ত্রীর গলায়। শুক্রবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, যে সব রাস্তায় যানজট হয় না, সেখানে পুলিশ এবং পুরসভার সঙ্গে কথা বলে ট্রাম চালাতে চায় সরকার।
আপাতত এসপ্লানেড-গড়িয়াহাট এবং টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ রুটে ট্রাম সচল রয়েছে। এ দিন থেকে চালু হয়েছে এসপ্লানেড থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত ট্রামের রুটও। ভবিষ্যতে খিদিরপুর-এসপ্লানেড রুট চালু করার পাশাপাশি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে কেন্দ্র করে হেরিটেজ রুট চালাতে চায় সরকার। যদিও, ট্রামপ্রেমীদের অনেকেরই অভিযোগ, যাদবপুর, বেলেঘাটা, ই এম বাইপাস, বেহালার বহু রাস্তায় ট্রাম না চলার পরেও তীব্র যানজট হয়। সুতরাং, যানজটের একতরফা দায় ট্রামের ঘাড়ে না চাপিয়ে শহরের পরিবহণের বাস্তব চিত্র খতিয়ে দেখার কথা বলছেন তাঁরা।
গত কয়েক বছরে মেট্রোর অগ্রগতির ফলে শহরের পরিবহণ মানচিত্রে অনেক বদল এসেছে। এই অবস্থায় মেট্রো, শহরতলির ট্রেন, চক্ররেল, জলপথ পরিবহণের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ট্রামের নিজস্ব পরিসর তৈরি করা উচিত, এমনটাই মনে করেন অনেকে। যেখানে ট্রাম অনায়াসে যোগাযোগের মধ্যবর্তী মাধ্যম হিসাবে কাজ করতে পারে। একই রাস্তায় বাস, অটো, ছোট গাড়ির জটে ট্রামকে না রেখে বরং শহরের পরিবহণ মানচিত্রে কী ভাবে তার পরিসর বার করা যায়, সে কথাই বলছেন ট্রামপ্রেমীরা।
কলকাতায় ট্রামের যে সব রুট রয়েছে, তা শিয়ালদহ, বালিগঞ্জ, টালিগঞ্জ, বিধাননগর, খিদিরপুর, বাগবাজার, শোভাবাজার এবং কলকাতার মতো আটটি রেল স্টেশনকে ছুঁয়ে অনায়াসে চলতে পারে। এ ছাড়াও টালিগঞ্জ, রবীন্দ্র সরোবর, কালীঘাট, যতীন দাস পার্ক, এসপ্লানেড, মহাত্মা গান্ধী রোড, ফুলবাগান, শিয়ালদহের মতো ১৩টি মেট্রো স্টেশন ছুঁয়েও চলতে পারে। আরও অনেকগুলি পথে এই সমন্বয় আধুনিক পরিবহণের চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে গড়ে তোলা যায় বলেও দাবি করা হয়েছে। যদিও সেই চেষ্টা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
এ দিন পরিবহণমন্ত্রী জানান, কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য মূলত বি বা দী বাগ-কেন্দ্রিক ১৫টি ট্রাম রুট বন্ধ রয়েছে। শিয়ালদহ এবং বেলগাছিয়াউড়ালপুল ব্যবহার না করতে পারার কারণে আরও ছ’টি রুট বন্ধ। তিনি ভবিষ্যতে এ নিয়ে সমীক্ষা করার আশ্বাস দিলেও ট্রাম রুটের সংখ্যা খুব বেশি বাড়বে বলে আশা দিতে পারেননি।
শহরের ট্রামকে বেসরকারি বিনিয়োগে কি আধুনিক করা যায় না? এ দিন এর উত্তরে স্নেহাশিস বলেন, ‘‘সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কাজ হতেই পারে। আমরা নানা ক্ষেত্রে এমন কাজ করছি। ভবিষ্যতে প্রস্তাব এলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’