পুজোর অনুদান প্রত্যাখ্যান করে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাধিক পুজো কমিটি। এ বার সেই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল নিহত তরুণীর বাড়ি যে এলাকায়, তারই পাশের পাড়ার একটি পুজো। মঙ্গলবার স্থানীয় থানায় চিঠি দিয়ে অনুদান প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে সেই পুজো কমিটি। পুজো হলেও আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পুজোকে কেন্দ্র করে সব ধরনের উৎসব বন্ধ রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
গত জুলাইয়ে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর সরকারি অনুদান ৭০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৮৫ হাজার টাকা করার ঘোষণা করেন। যদিও তার পরে আর জি কর-কাণ্ডের জেরে একাধিক পুজো কমিটি অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কয়েকটি পুজো কমিটি জানিয়েছিল, প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি এ বছর পুজোয় জাঁকজমক কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্যাতিতার পাশের পাড়ার পুজো কমিটিও এ বার সেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল।
স্থানীয় ওই পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা মঙ্গলবার বিকেলে থানায় গিয়ে এ বছর অনুদান গ্রহণে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়ে চিঠি দিয়ে আসেন। এমনকি, এ বছর পুজো হলেও কোনও জাঁকজমক করা হবে না বলেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক মানিক ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতি বছরই নবমীতে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। বিসর্জনও ধুমধাম করে হয়। থাকে শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান। কিন্তু এ বার সে সব কিছুই হবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনুদান নিয়ে আমাদের কমিটির মধ্যেই মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। এর পরে এলাকার বাসিন্দারাও অনুদানে আপত্তির কথা জানান। তার পরেই আমরা অনুদান প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত নিই।’’
ওই এলাকার বাসিন্দা তমোজিৎ ভদ্র বললেন, ‘‘পাশের পাড়ার মেয়ে এই ভাবে খুন হয়েছেন। দেশ ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে এর প্রতিবাদ হচ্ছে। তার পরে আমরা কী ভাবে উৎসবে থাকতে পারি? অনুদান নিলে কোনও চাঁদা দেওয়া হবে না বলে আমরা অনেকেই জানিয়েছিলাম। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি অনুদান নেওয়া হবে না। বিচার চেয়ে আন্দোলন আর উৎসব একসঙ্গে চলতে পারে না।’’
আর জি কর-কাণ্ডের পরে হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলার কয়েকটি পুজো কমিটিও অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কয়েক দিন আগে দুর্গাপুরের একটি পুজো কমিটিও এই সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতার নেতাজিনগর এবং বেহালার একাধিক পুজো কমিটি একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।