—ফাইল
সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেল করে তিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছেন। জানিয়েছেন, প্রতিবেশীরা তাঁকে খুনের চেষ্টা করছেন। ঠিক উপরের ফ্ল্যাট থেকে তাঁর ফ্ল্যাটে বিদ্যুৎ তরঙ্গ পাঠিয়ে তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বছর পঞ্চাশের অর্জুননারায়ণ জৈন ই-মেলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর ব্যাঙ্কে রাখা টাকার পুরোটাই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নামে লিখে দিয়ে যেতে চান।
সল্টলেকের ডিডি ব্লকের এক শপিং মল সংলগ্ন একটি আবাসনে ভাড়ার ফ্ল্যাটের থাকেন অর্জুননারায়ণ। তাঁকে নিয়ে বেজায় সমস্যায় রয়েছেন প্রতিবেশীরা। মুখ্যমন্ত্রীকে ই-মেলে তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপুরে তাঁর বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই ফ্ল্যাটটির মালিক, দুবাইয়ে কর্মরত সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বার বার থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা পাননি। কোভিড-কালে বেশ কিছু দিন আবাসনের বাইরে থাকার পরে অর্জুন সেখানে ফিরে এলে, আবাসনের তরফে জানানো হয়, করোনা-পরীক্ষা না করে তিনি সেখানে ঢুকতে পারবেন না। সেই সময়ে পুলিশ অর্জুনকে ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়ে যায়।’’
বার বার পুলিশকে বলেও সুরাহা না হওয়ায় সঞ্জয় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। সঞ্জয়ের আইনজীবী দীপ্তাংশু বসু বলেন, “অর্জুনের যাবতীয় ই-মেল দেখলেই বোঝা যায় উনি মানসিক ভাবে সুস্থ নন। আমরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করি। বিচারপতি জানিয়েছেন, কোনও ধরনের আইন বহির্ভূত কাজ করলে পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।” বিধাননগরের পুলিশকর্তাদের মতে, হাইকোর্টের নির্দেশ হাতে আসার পরেই এ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব হবে।
সঞ্জয় জানিয়েছেন, অর্জুন একাই থাকেন। ই-মেলে কখনও অর্জুন জানান, তাঁর ফ্ল্যাটের সোফার নীচেই তাঁর কবর খোঁড়া রয়েছে। আবার কখনও জানান, তাঁকে খুনের চক্রান্ত চলছে।
সঞ্জয়ের কথায়, “ওঁর চিকিৎসার প্রয়োজন।” ওই আবাসনের বাসিন্দা, ক্যাপ্টেন অতনু ঘোষের অভিযোগ, “অর্জুন রাত বারোটায় বেরিয়ে যান। ভোরে ফেরেন। জানলার বাইরের দিকে ২৪ ঘণ্টা জোরালো আলো জ্বলে। বেআইনি ভাবে সিসি ক্যামেরাও বসিয়ে রেখেছেন। তাঁর ধারণা তাঁকে খুন করার জন্য আমরা সবাই নাকি ষড়যন্ত্র করছি।”
অর্জুন অবশ্য দেখা করতে রাজি হননি। ফোনে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।