SSKM Hospital

লোহার রডে ভেদ টাকরা-নাসিকা গহ্বর, এসএসকেএমে সুস্থ যুবক

গলা ফুঁড়ে দিয়েছে রড। কিন্তু পরে দেখা যায়, সেটি মুখের ভিতরে গেঁথে রয়েছে। কোনও মতে রডটি বার করেন সমীরণের সঙ্গীরা। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে পিজিতে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৩
Share:

প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বছর চৌত্রিশের যুবককে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিল এসএসকেএম হাসপাতাল। ফাইল ছবি।

অল্পের জন্য গলা ফুঁড়ে যায়নি লোহার রড। কিন্তু মুখের ভিতরে ঢুকে টাকরা ফুটো করে পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় মস্তিষ্ক পর্যন্ত। তরল খাবার বেরিয়ে আসছিল নাক দিয়ে। খনখনে আওয়াজ বেরোচ্ছিল গলা দিয়ে। হচ্ছিল রক্তপাতও। শেষমেশ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বছর চৌত্রিশের যুবককে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিল এসএসকেএম হাসপাতাল।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা সমীরণ সর্দার পেশায় রাজমিস্ত্রি। দিনকয়েক আগে তিনি বারুইপুরে বাড়ি তৈরির কাজ করছিলেন। সঙ্গীরা জানান, গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। আচমকাই পা পিছলে তাতে পড়ে যান সমীরণ। গর্তের পাশে কংক্রিট থেকে বেরিয়ে ছিল লোহার রড। সেটি গেঁথে যায় তাঁর দেহে।

প্রথমে সকলে ভেবেছিলেন, গলা ফুঁড়ে দিয়েছে রড।কিন্তু পরে দেখা যায়, সেটি মুখের ভিতরে গেঁথে রয়েছে। কোনও মতে রডটি বার করেন সমীরণের সঙ্গীরা। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে পিজিতে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

পিজি-র প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অরিন্দম সরকার জানাচ্ছেন, দেখা যায়, রডটি টাকরা ভেদ করে, নাসিকা গহ্বর ফুঁড়ে পৌঁছে গিয়েছে একেবারে নাকের উপরিতলের কাছাকাছি। তিনি বলেন, ‘‘দু’টি সাইনাসের মাঝে একটি নরম হাড় (এথময়েড বোন) থাকে। তার উপরে থাকে একটি ঝিল্লি বা ক্রিবিফর্ম প্লেট। লোহার রডটি ওই পর্যন্ত গিয়ে আটকে গিয়েছিল। যদি সেটিও ফুটো হয়ে যেত, তা হলে মস্তিষ্কে আঘাত লাগার প্রভূত আশঙ্কা ছিল।” তা হলে আরও বড় বিপদ ঘটতে পারত বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

অরিন্দমের নেতৃত্বে প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক সৌম্য গায়েন, মনোরঞ্জন সাউ, শারণ অ্যালেক্স, নেহা আগারওয়াল, রূপল নন্দার দল অস্ত্রোপচারটি করেন। সৌম্য জানাচ্ছেন, মুখের ভিতরের মাংস ব্যবহার করে নাসিকা গহ্বর থেকে শুরু করে টাকরার ফুটো একের পর এক জোড়া লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, “রোগী সুস্থ রয়েছেন। তরল খাবার খাচ্ছেন। কথা বলতেও সমস্যা হচ্ছে না। কয়েক দিন পর্যবেক্ষণ করে ওঁকে ছাড়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement