Arrest

আক্রোশের বশেই কি নিউ টাউনে খুন শিশুকে, গ্রেফতার প্রতিবেশী

বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, অভিযুক্ত বুলবুলের সঙ্গে বাড়িভাড়া সংক্রান্ত গোলমাল চলছিল শিশুটির মা-বাবার। তার জেরেই বুলবুল ওই ঘটনা ঘটায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

নিউ টাউনে দু’বছরের এক শিশুকন্যাকে খুনের ঘটনায় স্থানীয় এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম বুলবুল আহমেদ। এই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ব্যক্তিগত আক্রোশের বলি হয়েছে ওই শিশুটি। পুলিশের দাবি, ঘুমন্ত শিশুটিকে মা-বাবার পাশ থেকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। জয়া রহমান নামে ওই শিশুটির দেহ মঙ্গলবার সকালে বালিগড়ির একটি জলাশয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। কচুরিপানার ভিতরে আটকে ছিল দেহটি। শিশুটিকে খুনের অভিযোগে বুলবুলকে গ্রেফতার করে টেকনো সিটি থানার পুলিশ।

Advertisement

বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, অভিযুক্ত বুলবুলের সঙ্গে বাড়িভাড়া সংক্রান্ত গোলমাল চলছিল শিশুটির মা-বাবার। তার জেরেই বুলবুল ওই ঘটনা ঘটায়। তবে, কী ভাবে বাবা-মায়ের মাঝখান থেকে সে শিশুটিকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, তা তাকে জেরা করে জানতে চাওয়া হবে। বুধবার ধৃতকে বারাসতের সিজেএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। বিচারক তাকে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, শিশুটির দেহ উদ্ধারের পরেই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়। তাতে জয়ার বাড়ির আশপাশে অভিযুক্তকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। শিশুটির বাবা শামসের শেখের দাবি, পুলিশের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, তাঁর মেয়েকে নিয়ে যে অভিযুক্ত চলে যাচ্ছে, সিসি ক্যামেরায় সে ছবিও ধরা পড়েছে। শামসের আদতে বিহারের বাসিন্দা। মাস তিনেক আগে ওই জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে আসেন তাঁরা। এলাকায় একটি খাবারের দোকান চালান তিনি। শামসের বলেন, ‘‘রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুয়েছিলাম। ভোরে ঘুম ভেঙে দেখি, মেয়ে বিছানায় নেই। কখন ওকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, টের পাইনি।’’ তদন্তকারীদের ধারণা, শিশুটিকে ঘুমন্ত অবস্থায় মুখে চাপা দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই সে কান্নাকাটি কিংবা চিৎকার করার সুযোগ পায়নি। ওই পরিবারের দু’টি মোবাইলও চুরি গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু কী ভাবে শিশুটিকে তুলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হল?

এ দিন বালিগড়ির ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, শামসের ও তাঁর স্ত্রী চাঁদনি একটি অ্যাসবেস্টসের ছাদওয়ালা ঘরে বসবাস করেন। গ্রামের বাসিন্দারাই বুলবুলের বিরুদ্ধে শিশুটিকে খুনের অভিযোগ করেছিলেন। তাঁরা জানান, বুলবুল আগে শামসেরের ওই ঘরেই ভাড়া থাকত। কিন্তু তার খারাপ ব্যবহারের কারণে পরবর্তী সময়ে বাড়ির মালিক বুলবুলকে আর থাকতে দেননি। সেই রাগেই সে শামসেরের মেয়েকে খুন করেছে বলে মনে করছে পুলিশ। শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধারের পরে তার পেট থেকে প্রচুর জল বেরিয়েছিল। তবে, শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল না বলেই খবর। পুলিশ মনে করছে, সরাসরি জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল মেয়েটিকে। তবে, তার আগে শিশুটির শ্বাসরোধ করা হয়েছিল কিনা, তা জানতে ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে পুলিশ।

ওই অ্যাসবেস্টসের ছাদওয়ালা ঘরের দরজা লোহার জালের উপরে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। দরজার যে জায়গায় লোহার ছিটকিনি রয়েছে, সেই জায়গার প্লাস্টিক এমন ভাবে ভাঙা, যাতে ভিতরের ছিটকিনিও খুলে ফেলা যায়। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, বুলবুল ভিতরের ছিটকিনি খুলে ঘরে ঢুকে শিশুটিকে নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে আবার ছিটকিনি ভিতর থেকে আটকে দিয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement