—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুব্রত বক্সীর ‘জামাই’ বলে নিজের পরিচয় দিত সে। ঘুরত নীল আলো লাগানো গাড়িতে। এই পরিচয়ে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে আনন্দপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম দীপঙ্কর দাস।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার আনন্দপুর থানা এলাকার এক বাসিন্দা পুলিশের কাছে দীপঙ্করের নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ব্যক্তি অভিযোগে জানিয়েছেন, দীপঙ্কর নিজেকে সুব্রত বক্সীর জামাই বলে পরিচয় দিয়েছিল। জানিয়েছিল, বিভিন্ন লোকের সঙ্গে তার পরিচিতি রয়েছে। সে প্রভাবশালী। চাকরি দিতে ও বিভিন্ন লাইসেন্স পাইয়ে দিতে পারে। আনন্দপুরের ওই বাসিন্দার অভিযোগ, এমন নানা কথা বলে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দীপঙ্কর তাঁর কাছ থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, আনন্দপুরের একটি অভিজাত আবাসনে থাকে দীপঙ্কর। বাড়ির সামনে থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের কাছ থেকে দু’টি নীল আলো লাগানো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সব গাড়িতে কখনও দুর্নীতি দমন শাখা, কখনও বা মানবাধিকার কমিশনের ভুয়ো বোর্ড লাগিয়ে ঘুরত অভিযুক্ত। তদন্তে উঠে এসেছে, দীপঙ্করের ফল ও রিয়্যাল এস্টেটের ব্যবসা রয়েছে। সে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছে বলেও জানা গিয়েছে। শুক্রবার ধৃতকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আলিপুর আদালত।
বর্তমানে একাধিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। জেলে
গিয়েছেন তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী-নেতা। এই আবহে তৃণমূল সাংসদ সুব্রত বক্সীর জামাই পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায় তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, শুধু দীপঙ্কর নয়, এই প্রতারণার পিছনে আরও অনেকে জড়িত। এর পিছনে রয়েছে একটি চক্র। একাধিক লোকের সঙ্গে প্রতারণা করে চক্রটি কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়েছে বলে অভিযোগ। এই প্রতারণা-চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজে
তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। কত দিন ধরে চলছে এই চক্রটি, তা-ও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।