—প্রতীকী চিত্র।
সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের শিল্পতালুকে তোলাবাজির অভিযোগে অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর কমিশনারেটের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, শিল্পতালুকের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কাছ থেকে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতা থেকে অপূর্বকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার পুলিশ তাকে বিধাননগরের এসিজেএম আদালতে হাজির করালে অপূর্বকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
তদন্তকারীরা জানান, একটি নিরাপত্তা সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংস্থাটির অভিযোগ, তাদের থেকে নানা ভাবে অপূর্ব অনেক বছর ধরে টাকা নিয়েছে। কখনও জোর করে নিজের পছন্দের লোকজনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছে। সংস্থার তরফে শ্যামল কর্মকার বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি খুবই প্রভাবশালী। সব সময়ে চল্লিশ-পঞ্চাশ জনকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরে। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা থেকে সে তোলাবাজি করত। টাকা না দিলে কিংবা ওর কথা মতো না চললেই হুমকি দিত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে বিদেশি সংস্থার টাওয়ার বিকল করে দিয়েছে।’’ গত জুলাইয়ে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থাটি।
পুলিশ জানায়, অপূর্বের সঙ্গে আরও কারা জড়িয়ে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ওই সংস্থাটির কাছ থেকে যা অভিযোগ পেয়েছে, তাতে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি বিভিন্ন টেলিকম সংস্থার উপর মহলকে হুমকি দিত। কারণ, তার হাতে রয়েছে নিরাপত্তাকর্মী, টাওয়ারের কাজকর্ম পরিচালনা ও সংরক্ষণের কাজ করা একাধিক লোকজন। সেই সব লোকজনকে কাজে লাগিয়ে সংস্থার বিভিন্ন কাজকর্ম, বিশেষত পরিষেবা প্রদানকারী টাওয়ার বিকল করে দেওয়ার হুমকিও সে বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ।
এক পদস্থ আধিকারিক জানান, বিদেশি সংস্থাগুলি পরিষেবা প্রদানকারী টাওয়ার কলকাতায় বসিয়েছে। কোনও টাওয়ার বিকল হলে সংস্থার প্রচুর ক্ষতি হয়। একই সঙ্গে তাদের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এখানকার সংস্থাগুলি টাওয়ার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা ছাড়া আরও একটি সংস্থাও অভিযোগ জানিয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, তোলাবাজির পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় পুলিশে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছে তারা।’’
তদন্তকারীরা জেনেছেন, তোলাবাজির টাকায় রীতিমতো বাহিনী তৈরি করে ওই ব্যক্তি। বহু সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীরা তার থেকে বেতন নিয়ে কাজ করতেন। তাঁদের কাজ ছিল, ওই ব্যক্তির নির্দেশ মতো বিভিন্ন সংস্থায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো, টাওয়ার বিকল করে দেওয়া। পরিষেবা ব্যাহত হলে বিদেশি সংস্থার বরাত হাতছাড়া হবে, এই ভয়ে সংস্থাগুলি ওই ব্যক্তির আর্থিক দাবি মেনে নিত, এমনটাই পুলিশ জেনেছে।