এসএসকেএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
বৃক্ক ও যকৃৎ বিকল ছিল। চিকিৎসকেরা তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দু’টি অঙ্গই একসঙ্গে প্রতিস্থাপনের। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে তা করা হলেও, শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হল ৩৪ বছরের অমিত কুমারের।
মরণোত্তর অঙ্গদানের মাধ্যমে শুক্রবার সকাল থেকে এসএসকেএমে প্রায় ১৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বৃক্ক (কিডনি) এবং যকৃৎ (লিভার) একসঙ্গে প্রতিস্থাপন হয়েছিল ওই যুবকের। এর পরে আইটিইউ-তে রাখা হয়েছিল অমিতকে। শনিবার সকালে ভেন্টিলেশনও খুলে দেওয়া হয়। সঙ্কট না কাটলেও স্থিতিশীল ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শনিবার গভীর রাত থেকে আচমকাই অমিতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই যুবকের। এর কারণ হিসেবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতিস্থাপন হওয়া বৃক্কটি অমিতের শরীর প্রত্যাখ্যান করেছে। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে গ্রাফ্ট-রিজেকশন। যকৃৎ নিয়ে সমস্যা ছিল না। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আপ্রাণ চেষ্টা করেও কিছু করা গেল না। কোনও ভাবেই কিডনি কাজ করল না।’’
ছোট থেকেই বৃক্কের সমস্যায় ভুগছিলেন অমিত। ২০০৮ সালে ডায়ালিসিস শুরু হয় তাঁর। তখনই ধরা পড়ে, তিনি হেপাটাইটিস সি-তেও আক্রান্ত। কয়েক বছরের চিকিৎসায় সেই সমস্যা মিটলেও, সিরোসিস অব লিভারে আক্রান্ত হন ওই যুবক।
গত বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা জগদীশ মণ্ডলের (৪৮) ব্রেন ডেথের পরে তাঁর বৃক্ক ও যকৃৎ অমিতের শরীরে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুক্রবার হয় সেই অস্ত্রোপচার। মরণোত্তর অঙ্গদানে বৃক্ক ও যকৃৎ প্রতিস্থাপনে পূর্ব ভারতে প্রথম ছিল এসএসকেএমের এই প্রচেষ্টা। একই ব্যক্তির শরীরে দু’টি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের দিক থেকে দেশে এটি ছিল ২২তম। শেষ পর্যন্ত সাফল্য না এলেও এখনই হাল ছাড়তে রাজি নন চিকিৎসকেরা। আগামী দিনেও এমন প্রয়াস তাঁরা চালিয়ে যেতে চান।