পিজির জরুরি বিভাগের বাইরে ট্রলিতে শুয়ে এ ভাবেই দেড় দিন কাটালেন আসানসোল থেকে আসা রোগী উত্তম সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
শয্যা নেই। এমন অজুহাতে প্রায় দেড় দিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ট্রলিতে বিনা চিকিৎসায় পড়ে রইলেন রোগী। সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ট্রলি-সহ রোগীর জায়গা হল ওয়ার্ডে। শুরু হল চিকিৎসাও। রবিবার এমনই ঘটনা ঘটল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেনে দিনকয়েক আগে শহরের পাঁচ সরকারি মেডিক্যাল কলেজে শুরু হওয়া কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা নিয়ে শুরুতেই প্রশ্ন তুলে দিল এই ঘটনা।
শয্যা খালি না থাকায় সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরানো কিংবা অন্য হাসপাতালে রেফার করার ঘটনা আকছারই ঘটে। আর জি কর-কাণ্ডের পরে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে এই সমস্যাও উঠে এসেছিল। পরিস্থিতি যে এখনও একই তিমিরে, তা সামনে এল আসানসোলের বাসিন্দা উত্তমকুমার সিংহ নামে এক পঁয়তাল্লিশ বছরের রোগীর এসএসকেএমের জরুরি বিভাগের বাইরে দেড় দিন পড়ে থাকার ঘটনায়।
পেশার প্রয়োজনে ঝাড়খণ্ডে গিয়েছিলেন কুলটি-বিএনআরের বাসিন্দা উত্তম। সেখানে তিনি উপর থেকে পড়ে শিরদাঁড়ায় আঘাত পান। পরিবারের দাবি, শিরদাঁড়া ও শরীরের পিছনের দিকের হাড় ভেঙেছে তাঁর। অভিযোগ, কলকাতায় আসার আগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেশ কিছু দিন তাঁকে ভর্তি রাখা হয়। তাঁর আত্মীয় দিলীপ প্রসাদের দাবি, সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, উত্তম আর দাঁড়াতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করে সেখান থেকে উত্তমকে কলকাতায় নিয়ে যেতে বলা হয়।
শনিবার সকালে উত্তমকে নিয়ে এসএসকেএমে আসেন তাঁর পরিজনেরা। অভিযোগ, ট্রলিতেই ছিলেন উত্তম। হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, শয্যা নেই। তাই তাঁকে ভর্তি করা যাবে না। রবিবার বেলার দিকে উত্তমের ট্রলির উপরে পড়ে থাকার খবর জানাজানি হতেই এসএসকেএমে উত্তমের চিকিৎসা শুরু হয়। পরিজনেরা জানান, দু’জন চিকিৎসক হাসপাতালের বাইরে এসে উত্তমকে পরীক্ষা করেন। দিলীপ বলেন, ‘‘তাঁরা জানান, শয্যা দিতে না পারলেও ট্রলিতে শুইয়ে চিকিৎসা করা হবে উত্তমের। ওকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
কেন ওই ব্যক্তিকে ট্রলিতে শুইয়ে আগেই চিকিৎসা শুরু হল না— উঠছে সেই প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে
এসএসকেএমের এক কর্তা বলেন, ‘‘জরুরি ভিত্তিতে মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার হয় না। বহির্বিভাগে দেখানোর পরে নাম নথিভুক্ত করে ভর্তির প্রক্রিয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কী ঘটেছে, দেখা হচ্ছে।’’