প্রতীকী ছবি।
ছুটি হওয়ার কথা ছিল কয়েক ঘণ্টা পরে। তার আগেই হাসপাতাল থেকে ফোন— ‘তাড়াতাড়ি চলে আসুন। রোগীর অবস্থা ভাল নয়।’ পরিবারের লোকজন হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারলেন, অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ওই রোগীর। তাঁর নাম অম্বরীশ দে (৫৮)।
শনিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে ‘বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজি’র অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের একতলায়। সেখানে একটি বন্ধ শৌচাগার থেকে উদ্ধার করা হয় অম্বরীশবাবুর ঝুলন্ত দেহ। তিনি হুগলির ভদ্রেশ্বর থানা এলাকার সুভাষপল্লিতে থাকতেন। পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা।
এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মৃতের পরিজনেরাও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগও জানান তাঁরা। ওই সময়ে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীরা কোথায় ছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, সেরিব্রাল অ্যাটাক-সহ একাধিক সমস্যা নিয়ে গত ২৭ জুন ওই হাসপাতালে ভর্তি হন অম্বরীশবাবু। এ দিন ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ তিনি শৌচাগারে যান। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পরেও না বেরোনোয় দরজা ভেঙে দেখা যায়, জানলা থেকে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন অম্বরীশবাবু। এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে দেহটি পাঠানো হয় ময়না-তদন্তে।
এ দিন সকালে মা গীতা দে-কে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে আসেন অম্বরীশবাবুর ছেলে অনিমেষ দে। অনিমেষ জানান, তাঁর বাবা বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। গত মাসে প্রথমে তাঁকে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসা ঠিক মতো না হওয়ায় গত ২৭ জুন এখানে নিয়ে আসা হয়। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা শুক্রবারও বলেছিলেন, বাবা অনেকটাই সুস্থ। তার পরেই এই কাণ্ড! হাসপাতালের নজরদারি থাকলে এ রকম হত না।’’
মৃতের পরিবারের বক্তব্য, তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন ওই ওয়ার্ড থেকে তিনটি মোবাইল ফোন চুরি যায়। সেই চুরির অভিযোগ ওঠে অম্বরীশবাবুর এক পরিচিতের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে অম্বরীশবাবু উদ্বেগে থাকতেন। এ দিন অনিমেষ দাবি করেন, এক ব্যক্তি আত্মীয় সেজে চলতি সপ্তাহে তাঁর বাবার কাছে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউ ওই ব্যক্তিকে চেনেন না।