Death

বিনা অনুমতিতে স্ত্রীর ভিডিয়ো, প্রতিবেশীর মারে মৃত্যু স্বামীর

পরিবারের তরফে প্রথমে রামশঙ্করকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও এক হাতুড়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:২০
Share:

রামশঙ্কর তিওয়ারি। —ফাইল চিত্র।

বিনা অনুমতিতে তোলা একটি ভিডিয়ো ঘিরে এক বছরের পুরনো গোলমাল। তাই নিয়ে দুই পরিবারে ধুন্ধুমার বেধেছিল বৃহস্পতিবার রাতে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ঝামেলা মিটিয়ে দিলেও শুক্রবার ভোরে ফের মারামারি হয় বস্তির দুই পরিবারে। এক জনের মারে মৃত্যু হয় আর এক জনের। দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার ওই ঘটনায় মৃতের নাম রামশঙ্কর তিওয়ারি (৪২)। তাঁর বুকে প্রতিবেশী যুবক ঘুষি মারেন বলে অভিযোগ পরিবারের।

Advertisement

পরিবারের তরফে প্রথমে রামশঙ্করকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও এক হাতুড়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রামশঙ্করকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কার্ল মার্ক্স সরণির মোহিত গলিতে। আকস্মিক ঘটনায় স্তম্ভিত রামশঙ্করের প্রতিবেশীরাও। তাঁরা জানান, রামশঙ্করের বুকে ঘুষি মারে তাঁর প্রতিবেশীর ছেলে। রামশঙ্করের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই সে পালিয়েছে।

যখন যেমন পেতেন, তেমন কাজ করতেন রামশঙ্কর। তাঁর ছেলে অনুভব জানান, তাঁর মায়ের একটি ভিডিয়ো মাস ছয়েক আগে তাঁরা দেখতে পান। অনুভবের কথায়, ‘‘না বলে শুধু ভিডিয়ো তোলাই নয়, সেটি শেয়ারও করা হচ্ছিল। এক পরিচিতের থেকে ভিডিয়োটি দেখতে পাই। মায়ের ওই ভিডিয়োটি তুলেছিল প্রতিবেশী বশিষ্ঠ সিংহের বড় ছেলে অভিষেক। তার পরে সে দেশের বাড়িতে চলে যায়। অভিষেক যে ভিডিয়োটি তুলেছিল, তা সে স্বীকার করেছে।’’ কলেজপড়ুয়া অনুভব ছাড়া বর্তমানে বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা ও ছোট বোন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন রামশঙ্কর।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, ওই ভিডিয়ো ঘিরেই দুই পরিবারের মধ্য গত ছ’মাস টানাপড়েন চলছিল। একাধিক বার অশান্তিও হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও দুই পরিবারের মধ্যে ধুন্ধুমার বাধলে পুলিশ গিয়ে সেই অশান্তি মিটিয়েছিল বলে দাবি মৃতের পরিবারের। এ দিন ভোরে রামশঙ্কর যখন কাজে বেরোচ্ছিলেন, তখন তাঁর উপরে চড়াও হয় বশিষ্ঠের পরিবারের লোকজন।

অনুভবের অভিযোগ, ‘‘ঘরের দরজায় টোকা দিয়ে বাবাকে বাইরে ডাকা হয়েছিল। আমরা তখন শুয়েছিলাম। বশিষ্ঠের ছোট ছেলে রাজা তার হাতের বালা খুলে বাবার বুকে-মুখে এলোপাথাড়ি মারে। তাতে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়ে গিয়েছিল।’’ রামশঙ্করকে নিয়ে অনুভব ও পরিজনেরা কলকাতা পুরসভার নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান। সেখান থেকে মেটিয়াবুরুজের এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি চিকিৎসা করতে অস্বীকার করায় রামশঙ্করকে নিয়ে এসএসকেএমে যায় তাঁর পরিবার।

পুলিশ জানায়, এসএসকেএমে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে জানালেও দেহ নিয়ে বাড়ি চলে আসে পরিবার। দুপুরের দিকে রামশঙ্করের ছেলে দক্ষিণ বন্দর থানায় গিয়ে সব জানালে পুলিশ বাড়ি থেকে রামশঙ্করের দেহ নিয়ে হাসপাতালে যায়। সেখানে সরকারি ভাবে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাতে প্রতিবেশী বশিষ্ঠ ও তাঁর ছোট ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে রামশঙ্করের পরিবার। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement