জট: এমন তার নিয়েই বেড়েছে জটিলতা। —ফাইল চিত্র।
দৃশ্যদূষণ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে সরাতে হবে কেব্ল টিভি ও ইন্টারনেট পরিষেবার তারের জট। এতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা-সহ স্থানীয় প্রশাসনগুলির একাংশ। তবে নতুন জট বেঁধেছে সেই জট ছাড়াতে গিয়েই। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এ নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে, বিশেষ করে কলকাতা পুরসভার নির্দেশ ও নীতিতে বিস্তর ধোঁয়াশা রয়েছে। যার জন্য স্থানীয় কেব্ল অপারেটর ও টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলির মধ্যে বিরোধ বাধছে। আখেরে ব্যাহত হচ্ছে গ্রাহক পরিষেবা। এ নিয়ে আজ, বুধবার টেলিকম পরিষেবা সংস্থা, ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থা এবং কেব্ল সংস্থাগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসছে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভার খুঁটির মাধ্যমে কেব্ল ও ইন্টারনেটের তার বা অপটিক্যাল ফাইবার (যেখানে রয়েছে) নিয়ে যাওয়ার চল দীর্ঘদিনের। কিন্তু বহু নিষ্ক্রিয় তার জট পাকিয়ে থাকায় বছরকয়েক আগে পুরসভা সেই সব তার ধাপে ধাপে সরিয়ে ফেলতে তিন পক্ষকেই নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি এ-ও জানায়, নতুন সংযোগের জন্য ভূগর্ভস্থ পাইপ দিয়েই তার বা ফাইবার নিয়ে যেতে হবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, মূল সমস্যা প্রশাসনিক স্তরের এই নীতির ধোঁয়াশা নিয়ে। যত দিন না ভূগর্ভস্থ পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে, তত দিন কী ভাবে নতুন সংযোগ দেওয়া হবে, ছোট রাস্তা বা গলির মধ্যেই বা কী ভাবে মাটির নীচে পরিকাঠামো তৈরি সম্ভব, উত্তর মেলেনি সেই সব প্রশ্নের। নিষ্ক্রিয় তার সরানোর কাজে নজরদারির জন্য তিন পক্ষের মধ্যে কেন ‘অল বেঙ্গল কেব্ল টিভি অ্যান্ড ব্রডব্যান্ড অপারেটর্স ইউনাইটেড ফোরাম’কেই দায়িত্ব দেওয়া হল, উঠছে সেই প্রশ্নও। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আগের নির্দেশের সময়ে আমি ছিলাম না। সব পক্ষকে নিয়ে সহমতের ভিত্তিতে কী ভাবে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করে এগোনো যায়, তা আমরা খতিয়ে দেখব।’’
সম্প্রতি রিলায়্যান্স জিয়ো, ভারতী এয়ারটেল ও ভোডাফোন আইডিয়ার মতো বেসরকারি টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলির সংগঠন কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করে, পুরসভার ওই নির্দেশকে হাতিয়ার করে কেব্ল অপারেটরেরা তাদের নতুন সংযোগ দিতে বা পুরনো সংযোগের মেরামতিতে বাধা দিচ্ছে। তাদের ফাইবার কাটা পড়ছে। একই অভিযোগ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএল-এরও।টেলিকম সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তার বা ফাইবার কেটে দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ এনেছেন কেব্ল অপারেটরেরাও। ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক চন্দ্রনাথ পাইনের দাবি, বেসরকারি সংস্থাগুলি নিয়ম ভেঙে অনৈতিক ভাবে বাড়তি সুবিধা দিয়ে তাঁদের হটাতে চাইছে। এখন কিছু টেলিকম সংস্থা সরাসরি ইন্টারনেট পরিষেবা দেয়। অন্য দিকে, ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি এই কাজ করে কেব্ল অপারেটরদের মাধ্যমে। কেব্ল অপারেটরদের দাবি, টেলিকম সংস্থাগুলিকেও তাঁদের মাধ্যমেই পরিষেবা দেওয়ার নিয়ম চালু করতে হবে।