মনোহরপুকুরের বাড়িতে পুলিশি প্রহরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
একে বছরখানেকের বেশি সময় ধরে কাজ নেই, তার উপরে সংসারের কর্তৃত্ব নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি! এ সব কারণে দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অরবিন্দ বজাজ। আর তার জেরেই শনিবার রাতে স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বজাজের উপরে চড়াও হয়ে একের পর এক ছুরির কোপ মারেন তিনি। সেই সময়ে মেয়ে সামনে চলে আসায় তাঁকেও আক্রমণ করেন অভিযুক্ত। মনোহরপুকুরের খুনের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে নেমে এমনই জানাচ্ছে পুলিশ। জেরায় অরবিন্দ ছুরি চালানোর কথা স্বীকার করেছেন বলেও তদন্তকারীদের দাবি।
শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ রবীন্দ্র সরোবর থানার মনোহরপুকুর রোডে এক মহিলাকে কোপানোর ঘটনা সামনে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, রাতেই ১০০ ডায়ালে ফোন করে স্ত্রী ও মেয়েকে কোপানোর কথা জানান অরবিন্দ। স্থানীয় থানার পুলিশ ও লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অফিসারেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত মা ও মেয়ে মেঝেয় পড়ে রয়েছেন। দ্রুত তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা প্রিয়াঙ্কাকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত বছর আঠারোর তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই ঘটনাস্থল থেকে অরবিন্দকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার ঘটনাস্থলে যায় ফরেন্সিক দল। ধৃতকে এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় অরবিন্দ জানিয়েছেন, ২০২০ সালে চাকরি চলে যায় তাঁর। তার পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন। তখন থেকেই শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়া শুরু। এই নিয়েই বাড়িতেও অশান্তি চলত। শনিবার এই অশান্তির জেরেই স্ত্রীর উপরে ছুরি নিয়ে চড়াও হয়ে একাধিক বার কোপ মারার কথা জেরায় জানিয়েছেন অভিযুক্ত। ওই সময়ে মেয়ে চলে এলে তাঁকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, একাধিক জনকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান অরবিন্দ নিজেই।
ধৃতের বিরুদ্ধে খুন ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুনের পিছনে আর কোনও কারণ আছে কি না, ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।