নেশামুক্তি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। প্রতীকী ছবি।
নেশা ছাড়ানোর নামে রোগীর উপরে অত্যাচারের অভিযোগ বিভিন্ন নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অতীতে একাধিক বার উঠেছে। এ বারের অভিযোগ, নেশামুক্তি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির।
পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁকে মৃত অবস্থায় এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাঁশদ্রোণীর ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের কাছে ঘটনার মাসখানেক বাদে লিখিত অভিযোগ করেছেন মৃতের স্ত্রী।
বাড়ি থেকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কী করে রোগীর মৃত্যু হল, তা জানতে ওই কেন্দ্রে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ এবং লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। আজ, শুক্রবার নেশামুক্তি কেন্দ্রটির মালিকপক্ষকে এই সংক্রান্ত সব কাগজপত্র-সহ ডেকে পাঠিয়েছে লালবাজার। বৃহস্পতিবার ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের নম্বরে বার বার যোগাযোগ করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
ঘটনার সূত্রপাত গত মাসের ১১ তারিখে। বেনিয়াপুকুরের রামেশ্বর শাহ রোডের বাসিন্দা বিদ্যানাথন শঙ্কর অমরনাথ নামে এক ব্যক্তিকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি করাতে মনস্থ করেন তাঁর স্ত্রী ফামিদা খাতুন। মহিলার দাবি, বিদ্যানাথন এক জন ব্যায়ামবীর। তিনি প্রচুর পরিমাণ স্টেরয়েড নিতেন। পরিস্থিতি এমন হয় যে, স্টেরয়েডে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। বাড়িতে এ নিয়ে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত বলে মহিলার দাবি। এর পরেই তিনি বাঁশদ্রোণীর নেশামুক্তি কেন্দ্রটির খোঁজ পান। সেখানে যোগাযোগ করে স্বামীকে ভর্তি করানোর কথা বলেন।
মহিলার অভিযোগ, পূর্ব পরিকল্পনা মতো ১১ এপ্রিল ওই নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে কয়েক জন ফামিদাদের বাড়িতে আসেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যেতে চাননি তাঁর স্বামী। এক রকম জোর করেই বিদ্যানাথনকে নিয়ে যান তাঁরা। সেই রাতেই পরে ফামিদার কাছে ফোন আসে যে, বিদ্যানাথন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মহিলার দাবি, এর পরে তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, বিদ্যানাথন তত ক্ষণে মারা গিয়েছেন। ফামিদার দাবি, গোটা ঘটনায় এতটাই হতবাক হয়ে যান তিনি যে, কিছুই করতে পারেননি। রীতি মেনে সৎকার করা হয় বিদ্যানাথনের। ওই ঘটনার এক মাস পরে বুধবার তিনি বাঁশদ্রোণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
কিন্তু, অভিযোগ করতে এত দেরি হল কেন? পুলিশের এই প্রশ্নের উত্তরে মহিলা বলেছেন, ‘‘হঠাৎ করে এমনটা কী করে ঘটল বুঝতে পারছি না। আমার স্বামী কোনও ভাবেই এত অসুস্থ ছিলেন না যে এমন ঘটবে। তবে কেন এমন ঘটল, সেই রহস্য ভেদ করতেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’’