অনিয়মের পথে রাশ টানবে কে

এক বাসিন্দা বলেন, গাড়ি নিয়ে ঢোকাই যায় না ওই রাস্তায়। নেমে হেঁটে ঢুকতে হয়। কারণ, বাইক, রিকশা, অটোয় সব জট পাকিয়ে গিয়েছে তখন। রিকশা রাস্তা খুঁজতে প্রাণপণে হর্ন বাজিয়ে চলেছে। মোটরবাইক ফাঁক গলে ঢুকতে গিয়ে আটকে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০১:২৭
Share:

সেই জটিল পথ। নিজস্ব চিত্র

সিগন্যাল সবুজ হয়ে আছে। কিন্তু গাড়ি এগোচ্ছে না মোটেই। তারস্বরে হর্ন বাজাচ্ছে গাড়ি, বাস, বাইক। তবু কিছুতেই নড়ছে না। তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে সব।

Advertisement

এটা অফিসপাড়ার কোনও রাস্তার ছবি নয়। রাজা সুবোধ মল্লিক রোড ধরে যাদবপুর থেকে গড়িয়া যাওয়ার পথে পড়বে গাঙ্গুলিবাগান। যে কোনও সন্ধ্যায় গাঙ্গুলিবাগান মোড়ে এমন দৃশ্যই দেখা যাবে।

ওই মোড় থেকে একটি রাস্তা গিয়েছে পূর্বে পাটুলির দিকে। আর একটি রাস্তা গিয়েছে পশ্চিমে, নাকতলার দিকে। সুবোধ মল্লিক রোডের পূর্ব দিক যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্র। কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ড। পশ্চিম দিকটা পড়ছে টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে। যার ওয়ার্ড নম্বর ১০০। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যত গোলমাল পূর্ব দিকে চলে যাওয়া রাস্তাটি নিয়েই। ওই রাস্তার নাম গাঙ্গুলিবাগান ইস্ট রোড। মোড় থেকে ঢুকলেই দক্ষিণ দিকে রিকশা স্ট্যান্ড। উত্তর দিকে পরপর দোকান, একাধিক এটিএম কাউন্টার। রিকশা স্ট্যান্ডের গা ঘেঁষেই একটি মদের দোকান রয়েছে। সন্ধ্যা সাতটা-রাত দশটা ওই রাস্তায় রিকশা, অটো, বাইক, গাড়ি মিলে এমন জট হয় যে হাঁটাও দায়।

Advertisement

রাতে কী অবস্থা হয় ওই রাস্তার?

এক বাসিন্দা বলেন, গাড়ি নিয়ে ঢোকাই যায় না ওই রাস্তায়। নেমে হেঁটে ঢুকতে হয়। কারণ, বাইক, রিকশা, অটোয় সব জট পাকিয়ে গিয়েছে তখন। রিকশা রাস্তা খুঁজতে প্রাণপণে হর্ন বাজিয়ে চলেছে। মোটরবাইক ফাঁক গলে ঢুকতে গিয়ে আটকে যায়। বাইকের চাকা আর রিকশার চাকা লেগে যায় গায়ে গায়ে। সমস্যটা বাড়ে পাশেই একটি মদের দোকানের কারণে। ওই দোকানের উল্টো দিকের ফুটপাত ঘেঁষে রাস্তার উপরে এলোমেলো ভাবে প্রায় কুড়িটি বাইক রাখা। তার কাছেই অটোরিকশার লাইন। রিকশা স্ট্যান্ডের লাইনকে ছাপিয়ে গিয়েছে মদের দোকানে ক্রেতার লাইন। হঠাৎ দেখলে বোঝা যায় না কোনটা কিসের লাইন।

আশপাশে কোথাও পুলিশের দেখা নেই। মোড়ের পশ্চিমে একটি ট্র্যাফিক পুলিশের গুমটি, সেখানে কর্তব্যরত এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। তিনি জানালেন, ‘‘আমার উপরে নির্দেশ আছে গুমটি ছেড়ে না যাওয়ার।’’

আসা-যাওয়ার পথে রোজকার এই অবস্থা সম্পর্কে অবহিত ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। রাতের ওই সময়টায় তিনি নিজেই এড়িয়ে চলেন ওই মোড়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই সমস্যা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে অনেক বার কথা বলেছি। কিন্তু কিছু সমাধান করতে পারছি না। মানুষ অভিযোগ করছেন। কিন্তু এটা তো পুর পরিষেবার অঙ্গ নয় যে সরাসরি ব্যবস্থা নেব!’’

পাটুলি থানা সূত্রের খবর, প্রশাসনিক কারণে সরাসরি মদের দোকান বন্ধ করা সম্ভব নয়। পুলিশের তরফে মাঝেমধ্যে ধরপাকড় চালানো হলেও তাতে সুরাহা হয়নি। প্রশাসনিক স্তরে অভিযোগ জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement