—প্রতীকী চিত্র।
সেতুর নীচে ইলেক্ট্রিক ট্রলিতে করে কাজ করার সময়ে লোহার বিমে ধাক্কা লেগে মারা গেলেন এক শ্রমিক। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বিদ্যাসাগর সেতুতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শ্রমিকের নাম হরিপদ দাস (৩৫)। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের শীতলপুরে। কর্মসূত্রে তিনি কলকাতায় থাকতেন। হরিপদর পরিজনদের খবর পাঠিয়েছে পুলিশ।
ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে বার বার সুরক্ষা-বিধি মেনে চলার কথা বলা হলেও আদৌ তা নিয়ে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে কি না, এই ঘটনার পরে ফের এক বার সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, হরিপদর মাথায় হেলমেট ছিল না।
গত কয়েক দিন ধরে বিদ্যাসাগর সেতুতে বিদ্যুতের লাইন মেরামতির কাজ চলছে। সেতুর নীচের অংশে এ দিন বিদ্যুতের লাইন মেরামতির সেই কাজ করতে গিয়েছিলেন চার জন শ্রমিক। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চার জনের দলটি একটি ইলেক্ট্রিক ট্রলির মাধ্যমে সেতুর নীচে নেমেছিল। কাজ করার সময়েই ওই ট্রলিতে থাকা হরিপদর মাথা কোনও ভাবে সেতুর লোহার বিমের একাংশে ধাক্কা খায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে। আঘাত গুরুতর বুঝতে পেরে ট্রলিতে থাকা অন্য শ্রমিকেরা ইলেক্ট্রিক ট্রলিটিকে সেতুর উপরে নিয়ে আসার কথা বলেন। হরিপদকে ওই ট্রলি থেকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
বহুতলে কাজ করার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট সুরক্ষা-বিধি রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা থাকে খাতায়কলমে। ফলে কোনও সুরক্ষা-বিধি ছাড়া কাজ করতে গিয়ে বহুতলের উপর থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা শহরে মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। বিদ্যাসাগর সেতুর নীচের অংশে যাঁরা কাজ করতে গিয়েছিলেন, ট্রলি থেকে কোনও ভাবে পড়ে গেলে মারাত্মক দুর্ঘটনা যে ঘটতে পারে, সেটা তাঁরা জানতেন। অথচ তার পরেও কাজ করতে গিয়ে সুরক্ষাকবচ ছাড়া কী ভাবে ট্রলিতে উঠে গেলেন ওই শ্রমিকেরা, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
যে বেসরকারি সংস্থার হয়ে ওই ঠিকা শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন, সেই সংস্থার আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় রবিবার রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি।