— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শেষ বার স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। তার পরে কেটে গিয়েছে সাড়ে সাত বছরের বেশি সময়। ফের নতুন করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বহু চাকরিপ্রার্থী। ২০২২ সালের ৫ মে এসএসসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, নতুন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দ্রুত প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তার পরেও কেটে গিয়েছে দু’বছর। এখনও নতুন এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি কমিশন।
তবে সেই প্রতিশ্রুতির বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর দু’বছর পূর্তির দিনেই, রবিবার ব্রেন স্ট্রোকে মারা গেলেন নতুন এসএসসি পরীক্ষার দাবিতে পথে নামা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ইমরান হোসেন (৩০)। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমান্ডি ব্লকের আমিনপুরের বাসিন্দা ইমরানের কোনও রকম অসুস্থতা ছিল না। শনিবার রাতেও তিনি সুস্থ ছিলেন। তবে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে, দীর্ঘ বেকারত্বের জেরে অত্যধিক দুশ্চিন্তায় ছিলেন ইমরান। ছিল মানসিক চাপও। রবিবার সকালে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করার কিছু ক্ষণ পরেই মারা যান।
ইমরানের মৃত্যুতে মুহ্যমান রাজপথে নিয়োগের দাবিতে নামা আন্দোলনকারীরা। খবর পেয়ে কলকাতা থেকে ইমরানের বাড়িতে গিয়েছেন আন্দোলনকারী তারিক আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘‘এসএসসির পরীক্ষার দাবিতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউ এসএসসি এসএলএসটি গ্রুপ সি, ডি একতা মঞ্চ’ ইমরানের উদ্যোগেই তৈরি হয়। ওঁর নেতৃত্বেই আমরা কালীঘাট অভিযান থেকে শুরু করে সল্টলেকে এসএসসি ভবন অভিযান করেছি। ইমরানের মতো তরতাজা ছেলে মাঝেমধ্যেই অবসাদে ভুগত। আমাদেরও এক অবস্থা। আর কত ছেলেকে যে ইমরানের মতো চলে যেতে হবে, কে জানে!’’
চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, শিক্ষকতার লক্ষ্যেই অঙ্কে স্নাতকোত্তরের পরে বি এড করেছিলেন তিনি। নতুন এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে না দেখে ২০২০ সাল থেকে সংগঠন তৈরি করে আন্দোলনে নামেন। উচ্চ প্রাথমিকের এক চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘ওদের সংগঠন মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে মঞ্চ করে আন্দোলন করেছে। গত ৪ এপ্রিল ইমরানের নেতৃত্বেই কালীঘাট অভিযান হয়েছিল। সোমবার আমরা মঞ্চে নীরবতা পালন করব।’’
ইমরানের মা রিনা খাতুন বলেন, ‘‘ওর কোনও রোগ ছিল না। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। ছেলে সব সময়ে বলত, মা, এই আন্দোলনের জয় হবে। কিন্তু ছেলেটা এসএসসি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পর্যন্ত পেল না।’’