স্কুলের মেঝেতে ক্লাস পঞ্চম শ্রেণির। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি নির্দেশ না মেনে বৃহস্পতিবার স্কুল চত্বরে পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়ার অভিযোগ উঠল হাওড়ার একটি স্কুলের বিরুদ্ধে। সালকিয়া কেদারনাথ বাবুলাল রাজগড়িয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় জেলা শিক্ষা ভবনে। অবিলম্বে ক্লাস বন্ধ করে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও জেলা স্কুলশিক্ষা পরিদর্শক। ডেকে পাঠানো হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৈত্রেয়ী সিংহের দাবি, জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ দেখে তাঁরা পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস শুরু করেছিলেন। তবে জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের দাবি, কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেই এমন নির্দেশিকা জারি হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’। স্কুলের মাঠে অথবা আশপাশের কোনও ফাঁকা জায়গায় পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া হবে। কোভিড-বিধি মেনে বৃহস্পতিবার কেবল অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসই স্কুলে শুরুর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। জেলা শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মতো এ দিন অষ্টম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত ক্লাস শুরু হলেও ব্যতিক্রম ছিল সালকিয়ার এই স্কুলটি।
এ দিন সালকিয়ার ৯/১, বিপ্লবী বীরেন ব্যানার্জি সরণির ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, ভিতরে তখন পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীদের ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। স্কুল চত্বরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে মাটিতে বসিয়ে ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের ক্লাসও। প্রশ্ন ছিল, রাজ্য সরকারের নির্দেশ অমান্য করে কেন স্কুলে পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে? উত্তরে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস শুরুর নির্দেশিকা দেখেই তা চালু করেছি।’’
জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা কোনও স্কুলকে দেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা জেলার প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ৩ ফেব্রুয়ারি স্কুলে শুরু হবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস। আর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ কর্মসূচিতে পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস হবে স্কুলের মাঠে বা আশপাশের ফাঁকা জায়গায়। এর পরেও কেন ওই স্কুল এমন করল, তা বিভাগীয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ দিন খবর পেয়ে সেখানে যান স্কুল পরিদর্শকেরা। জেলা স্কুল পরিদর্শক দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘‘ভিডিয়ো কনফারেন্স করে সরকারি নির্দেশিকা সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের জানানো হয়েছে। তার পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন এমন করলেন, তা দেখা হচ্ছে। ডাকা হয়েছে প্রধান শিক্ষিকাকে।’’