প্রতীকী ছবি।
তিনি নিজে দৃষ্টিহীন। কিন্তু, অসংখ্য পড়ুয়ার চোখে শিক্ষার আলো জ্বেলেছেন দমদম মাঠকলের চিন্ময় মণ্ডল। দমদমেরই একটি প্রাথমিক স্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁদের পারিবারিক জমিতে উদ্বোধন হল রাজ্য সরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের। পারিবারিক পাঁচ কাঠা জমি চিন্ময়বাবুরা দান করেছেন স্কুলের জন্য। এ দিন স্কুলটির উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থবাবু-সহ অন্য বক্তাদের মতে, ইংরেজি মাধ্যম সময়ের দাবি। কিন্তু সমাজে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষজন তাঁদের সন্তানদের বেসরকারি স্কুলগুলিতে ভর্তি করতে পারেন না। সেই জন্য রাজ্য জুড়ে ১০০টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই তালিকায় দমদমের স্কুলটি ৬৫তম।
চিন্ময়বাবু এ দিন বলেন, ‘‘তাঁর মা প্রয়াত ভবতারিণী মণ্ডলের ইচ্ছা ছিল, সমাজের সব স্তরের মানুষ যাতে তাঁদের ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ করে দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা। মায়ের ইচ্ছেকে সম্মান জানাতেই তাঁদের এমন উদ্যোগ।’’ স্কুলটির নামকরণও হয়েছে ভবতারিণীদেবীর নামে।
এ দিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ইংরেজিতে শিক্ষা কতটা প্রয়োজনীয়, তা পদে পদে বুঝতে পারছে পড়ুয়ারা। বাম আমলে ইংরেজি তুলে দেওয়ায় কয়েক প্রজন্মের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল তৈরি করে সকলের নাগালের মধ্যে এই শিক্ষাকে পৌঁছে দেওয়া যায়।’’
গত কয়েক বছরে শহরের সরকারি স্কুলগুলিতে ধারাবাহিক ভাবে পড়ুয়া কমছে। কোথাও কোথাও পড়ুয়ার থেকে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। বেশির ভাগ পড়ুয়া ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হওয়ায় এমন অবস্থা। পার্থবাবু জানান, এই ধরনের স্কুলগুলিতে পরিকাঠামো বাড়ানো হবে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘শিক্ষা এখন বিক্রি হচ্ছে। বেসরকারি ইংরেজি স্কুলগুলিতে ভর্তি হতে গেলে এক-দেড় লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। ফলে সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।’’
দমদমের স্কুলটিতে প্রাক্ প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানো হবে। আপাতত চালু হচ্ছে প্রাক্ প্রাথমিক এবং প্রথম শ্রেণি। এলাকার বিধায়ক ব্রাত্য বসু জানান, এই স্কুলের জন্য ৩২ জন শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে।