অঘটন: দুর্ঘটনার পরে সায়ন্তিকা। নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনায় বাঁ পায়ের মাঝের আঙুল বাদ গেল এক শিশুর। পরিবারের অভিযোগ, বরাহনগর পুরসভার জলের গাড়িতে ধাক্কা লেগে ঘটনাটি ঘটেছে। তাদের আরও অভিযোগ, ঘটনাটি জেনেও পুরসভার তরফে সহযোগিতা করা হয়নি। যদিও পুর কর্তৃপক্ষ অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২৬ অক্টোবর শনিবার দুর্ঘটনাটি ঘটে বরাহনগরের ব্যানার্জি পাড়ায়। শিশুটির নাম সায়ন্তিকা পাল। সে বরাহনগরের রাজকুমার মুখার্জি রোডের বাসিন্দা। শিশুটির বাবা পেশায় অ্যাপ নির্ভর খাবার সরবরাহকারী সংস্থার ডেলিভারি বয় তাপস পাল জানান, ওই দিন দুপুরে মেয়েকে নিয়ে স্কুটিতে চাপিয়ে তিনি টিউশন থেকে ফিরছিলেন। তাপসের স্কুটির পিছনে বসেছিল সায়ন্তিকা। ব্যানার্জি পাড়ায় যানজট থাকায় গাড়ির লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই যুবক। তিনি বলেন, ‘‘সামনের গাড়িকে এগোতে দেখে স্কুটিটি চালু করার আগেই পাশে থাকা পুরসভার জলের গাড়িটি চালিয়ে দেন চালক। তাতেই মেয়ের পায়ে ধাক্কা লাগে।’’
তাপস জানান, সায়ন্তিকাকে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। পরে স্থানীয় এক অস্থি চিকিৎসকের কাছে মেয়েকে নিয়ে যান তিনি। তাপসের কথায়, ‘‘বাইরে চিকিৎসার খরচ বহন করা সম্ভব ছিল না। ওই রাতেই পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানকে বিষয়টি ফোনে জানাই।’’ ২৮ অক্টোবর শিশুটিকে বাড়িতে দেখতে গিয়ে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাসও দেন ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত রায়।
এ দিকে, পায়ের আঙুল ক্রমে কালো হয়ে যাওয়ায় সায়ন্তিকার বাবা-মা ৩০ অক্টোবর, বুধবার মেয়েকে এসএসকেএমে নিয়ে যান। সেখানে প্রেসক্রিপশনে একটি তারিখ দেওয়া হয়। তাপস বলেন, ‘‘মেয়ের পায়ের অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। তাই আর দেরি না করে সুদে টাকা ধার করি। স্থানীয় এক ব্যক্তিও টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। এর পরেই বেসরকারি হাসপাতালে মেয়ের অস্ত্রোপচার করাই।’’ ৩১ অক্টোবর পুরসভার চেয়ারপার্সনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও করেন তাপস। অসহযোগিতার কথা অস্বীকার করে জয়ন্ত বলেন, ‘‘আমি নিজে বাচ্চাটির বাড়িতে গিয়েছি। পুরসভার তরফে কতটা কী করা যায় সে কথাও বলেছি।’’
পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, পুরসভার জলের গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। স্কুটি নিয়ে যাওয়ার সময়ে গাড়ির লোহার আংটা বাচ্চাটির পায়ে লেগে যায়। তাতেই অঘটন ঘটেছে। তাও মানবিকতার খাতিরে পুরসভার তরফে বাচ্চাটির চিকিৎসায় আর্থিক সহযোগিতার কথাও বলেছি।’’