Death

ডেঙ্গিতে এ বার মৃত্যু বাগুইআটির কিশোরীর

বিধাননগরে বাগুইআটি ডাকঘর এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরীর নাম দিৎসা গঙ্গোপাধ্যায় (১৪)। পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে। মঙ্গলবার মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০৬
Share:

দিৎসা গঙ্গোপাধ্যায়।

ডেঙ্গির সংক্রমণ ও মৃত্যু— দুটোরই লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যে। মঙ্গলবার বিধাননগরের বাসিন্দা এক কিশোরী ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছে। এ নিয়ে এই রোগে বিধাননগরে তিন জনের মৃত্যু হল। অন্য দিকে, দক্ষিণ কলকাতার পাশাপাশি এ বার উত্তর কলকাতার বিভিন্ন অংশেও ডেঙ্গির দাপট দেখা যাচ্ছে। চলতি মরসুমে কলকাতায় এখনও পর্যন্ত ১২ জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ১০ জনই দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। বাকি দু’জন উত্তরের।

Advertisement

বিধাননগরে বাগুইআটি ডাকঘর এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরীর নাম দিৎসা গঙ্গোপাধ্যায় (১৪)। পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে। মঙ্গলবার মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে মারাত্মক রকমের ডেঙ্গি সংক্রমণের উল্লেখ রয়েছে। পরিবার জানিয়েছে, গত ১১ অক্টোবর মেয়েটির জ্বর এসেছিল। ১২ তারিখ ডেঙ্গি ধরা পড়ে। বাবা দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পরিবারের সকলেরই জ্বর হয়েছিল। মেয়ের ডেঙ্গি ধরা পড়ার পরে তাকে ১৩ অক্টোবর ভিআইপি রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে আচমকাই কিশোরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন গ্রিন করিডর করে মুকুন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরীকে। সেখানেই রাতে মৃত্যু হয় তার।

এর আগে সল্টলেকের বৈশাখী আবাসনে ছ’বছরের এক শিশু এবং রাজারহাটের দশদ্রোণ এলাকায় এক মহিলার ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছিল। গত সপ্তাহে বিধাননগরে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪২৬। পুরসভা সূত্রের খবর, বাগুইআটি, রাজারহাট ও সল্টলেকের কোনও কোনও এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ যথেষ্ট বেশি। স্বাস্থ্য দফতরের গত সপ্তাহের রিপোর্টেই তা জানা গিয়েছে। যে কারণে পুরসভার তরফে ডেঙ্গিপ্রবণ ওয়ার্ডগুলিতে দিনে দু’বার করে সাফাই অভিযানের পদক্ষেপ করা হয়েছে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পুরসভা ডেঙ্গি মোকাবিলায় সব ধরনের পদক্ষেপ করছে। এক পুর মেডিক্যাল অফিসারকে ওই কিশোরীর বাড়িতে যেতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

ওই কিশোরীর বাড়ি বিধাননগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান প্রণয় রায় জানান, তিনি বুধবার দুপুরে খবর পেয়েছেন। প্রণয় বলেন, ‘‘আমি ওই কিশোরীর বাবাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তবু বলছি, শুধু পুরসভার দিকে না তাকিয়ে মানুষকেও সতর্ক হতে হবে। কারণ, বহু বাড়িতে এখনও ফুলদানিতে, ফ্রিজের ভিতরে বা ছাদের টবে জমা জলে লার্ভা মিলছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পুরসভা ধরে হিসাব করলে কলকাতার পরেই বিধাননগরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তার পরে রয়েছে হাওড়া ও বালি।

অন্য দিকে, দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তর কলকাতাতেও ডেঙ্গি বাড়তে থাকায় উদ্বেগে স্বাস্থ্যকর্তারা। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, এক নম্বর বরোর কাশীপুর, টালা, শ্যামবাজার এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তিন নম্বর বরোর মানিকতলা, উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছিতেও ডেঙ্গি আগের তুলনায় বেড়েছে। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখন সারা শহর জুড়েই ডেঙ্গি হচ্ছে। আগে কেবল দক্ষিণ কলকাতাতেই আক্রান্তের হার বেশি ছিল। এ বার উত্তরেও ছড়াচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে অনুরোধ করছি। শীত না পড়লে ডেঙ্গি থামার সম্ভাবনা নেই।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার নয়, দশ, বারো, তেরো ও চোদ্দো নম্বর বরোয় ডেঙ্গি অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement