—প্রতীকী চিত্র।
কালীপুজোর রাতে খিচুড়ি দেওয়া নিয়ে গোলমালের জেরে এক মোটর মিস্ত্রি তথা গ্যারাজ মালিককে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাতে পেটে আঘাত লাগার জেরে মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে সেই মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, গ্যারাজের অদূরে জুয়া-বেটিংয়ের প্রতিবাদ করার জেরেই মারধর করা হয় ওই ব্যক্তিকে। মানিকতলা থানা এলাকার ঘটনাটি।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অনিল রজক (৪৭)। তিনি বাগমারি বাজার এলাকার অদূরে একটি গ্যারাজ চালাতেন। তিনি মোটর মিস্ত্রিও ছিলেন। অভিযোগ, কালীপুজোর রাতে গ্যারাজ চত্বরে থাকা একটি গ্রিলের কারখানার লোকজনের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়েন অনিল। গ্যারাজের অন্য কর্মীরা জানান, অনিল গ্যারাজেই কালীপুজো করতেন। সোমবার রাতে গ্রিল কারখানার লোকজন সেখানে গিয়ে খিচুড়ি চান। অভিযোগ, অনিল সেই মুহূর্তে খিচুড়ি দিতে না চাওয়ায় গ্রিল কারখানার লোকেরা তাঁকে মারধর করেন। ওই সময়েই স্থানীয় বাসিন্দারা দু’পক্ষকে আলাদা করে দেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ফের গ্যারাজে গিয়ে অনিলের উপরে চড়াও হন গ্রিল কারখানার কর্মীরা। গ্যারাজ চত্বরে দাঁড় করানো গাড়ির গায়ে অনিলকে ঠেসে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকি তাঁকে মাটিতে ফেলে পেটে-বুকে লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ।
বুধবার বাগমারি বাজারের অদূরে অনিলের ওই গ্যারাজে গিয়ে দেখা যায়, সেটি বন্ধ। তবে গ্যারাজের অন্য কর্মীদের অভিযোগ, গ্রিল কারখানাটিতে অনেক রাত পর্যন্ত মদ ও জুয়ার আড্ডা বসত। এমনকি সেখানে সাট্টা ও বেটিংও চলত। গ্যারাজ কর্মীরা জানান, সেই সাট্টা-বেটিংয়ের বিরোধিতা করতেন অনিল। তার জেরেই তাঁর উপরে আক্রমণ বলেও দাবি করছেন তাঁরা।
অনিলের স্ত্রী মালতি জানান, দ্বিতীয় দফায় মারধরের পরে মঙ্গলবার বিকেলে অনিল অসুস্থ বোধ করেন। তাঁর বমি হয়। তখন তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার খানিক বাদে ফের অনিলের তলপেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। তখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করা হলেও রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। মালতির কথায়, ‘‘ওঁকে যে মারধর করা হয়েছে, তা শুরুতে আমাদের বলেননি। রাতে তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলে বলেন যে, ওঁকে মারধর করা হয়েছে। ওঁর গ্যারাজেই মারামারি হয়েছিল। আমি চাই, দোষীরা শাস্তি পাক।’’
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, অনিলের পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। প্রাথমিক ভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে মানিকতলা থানার পুলিশ। অনিলের দেহের সুরতহাল ও ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে পুলিশ। হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলেও পুলিশ জেনেছে, অনিলের তলপেটে যে যন্ত্রণা হচ্ছিল। বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ অনিলের বাড়ি থেকে তাঁর দেহ হাসপাতালে নিয়ে যায়।