বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভ্যানচালক ঋজু দে-কে (২৯) ছুরি মেরে খুন করার অভিযোগ উঠেেছে। প্রতীকী চিত্র।
দোকানের সামনে ভ্যান রাখা নিয়ে ঝামেলা যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই শুরু হয়েছিল, তা নয়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই মনোমালিন্য চলছিল দুই বন্ধুর মধ্যে। তবে, সেই মনোমালিন্যের অবসান যে খুনোখুনিতে গিয়ে ঘটবে, দুঃস্বপ্নেও তা ভাবেননি মানিকতলা থানা এলাকার বাগমারি রোডের ক্ষুদিরামপল্লির বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভ্যানচালক ঋজু দে-কে (২৯) ছুরি মেরে খুন করার অভিযোগে মুদি দোকানের মালিক, ৩১ বছরের আকাশ রায়কে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে ৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে শিয়ালদহ আদালত।
ঋজু এবং আকাশ, দু’জনেরই বাড়ি ক্ষুদিরামপল্লিতে। শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঋজুর বাড়িতে ভিড় করেছেন প্রতিবেশীরা। তাঁর বাবা সীতানাথ দে এবং মা লক্ষ্মী দে, কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। পরিবার সূত্রের খবর, লক্ষ্মী পরিচারিকার কাজ করেন। সীতানাথ বাগমারি নর্থ রোডের একটি গেঞ্জি কারখানার কর্মী। ঋজু তাঁদের একমাত্র সন্তান। ঋজুর জেঠিমা রীনা দে জানান, ঋজু আকাশের বন্ধু ছিলেন। কিন্তু দোকানের সামনে ভ্যান রাখা নিয়ে দু’দিন ধরে দুই বন্ধুর মধ্যে ঝামেলা চলছিল। যদিও ওই জায়গায় এলাকার অনেকেই ভ্যান, অটো রাখেন।
রীনার অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাড়ার দুটো বাচ্চা ছেলে ঋজুর ভ্যান নিয়ে ঠেলাঠেলি করছিল। সেই সময়ে আকাশ গিয়ে ভ্যানটা উল্টে দেয়। তা নিয়েই ঋজু ও আকাশের মধ্যে বচসা শুরু হয়। এর পরে আকাশের বাড়িরএকতলার দোকানঘরে শুরু হয় হাতাহাতি। তখনই আকাশ ঋজুকে ছুরি মারে।’’ রীনার আরও দাবি, ‘‘রক্তাক্ত অবস্থায় ঋজুকে পড়ে থাকতে দেখে আকাশের মাসি চিৎকার করে বলতে থাকেন, কারেন্ট লেগেছে, কারেন্ট লেগেছে।’’
অভিযুক্ত আকাশের বাবা-মা নেই। সে একাই থাকত। বাড়িরই একতলায় তার দোকান। পাশেই থাকেন আকাশের মাসি বাসন্তী দাস। তাঁর দাবি, ‘‘কারেন্ট লেগেছে, এমন কথা আমি বলিনি। কী হয়েছে, বলতে পারব না।’’ আকাশের বাড়ির বারান্দায় গাঁজা গাছ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অভিযুক্ত আকাশ অনেক রকম নেশা করত। তার ব্যবহারও ছিল অত্যন্ত খারাপ। যমুনা দলুই নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘আকাশ যেন কোনও ভাবেই ছাড়া না পায়। ও ছাড়া পেলে আরও অপরাধ করতে পারে।’’ আকাশের খারাপ ব্যবহার প্রসঙ্গে বাসন্তী বলেন, ‘‘এখন তো লোকে কত কিছুই বলবে।’’