Drowning Death

দ্রুত সুস্থ হতে সাঁতার, বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে ডুবলেন যুবকও

এ বার হেরিটেজ কলেজে এমবিএ-তে ভর্তি হয়েছিলেন সৌরীশ। জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে। বন্ধু রণিত বন্দ্যোপাধ্যায় ওড়িশা থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়া শেষ করে কিছু দিন আগেই বাড়ি ফেরেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ০৭:২৮
Share:

(বাঁ দিকে) সৌরীশ দাস। (ডান দিকে) রণিত বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

মাসখানেক আগেই হাঁটুর অস্ত্রোপচার হয়েছিল যুবকের। দ্রুত সুস্থ হতে সাঁতার কাটার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। সেই মতো দিন চারেক ধরে সাঁতার কাটতে যাচ্ছিলেন সৌরীশ দাস। সঙ্গে যেতেন দুই বন্ধু রণিত ও অরিন্দম। সোমবার বিকেলে তাঁরা নেমেছিলেন পাটুলির একটি পুকুরে। সেখানেই রণিতকে তলিয়ে যেতে দেখে তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ডুবে গেলেন সৌরীশও। ঘণ্টা দুয়েক পরে দু’জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নেতাজিনগরের আদর্শপল্লি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে দুই যুবকের এই আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।

Advertisement

স্নাতক হওয়ার পরে এ বার হেরিটেজ কলেজে এমবিএ-তে ভর্তি হয়েছিলেন সৌরীশ। জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে। বন্ধু রণিত বন্দ্যোপাধ্যায় ওড়িশা থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়া শেষ করে কিছু দিন আগেই বাড়ি ফেরেন। গুরুগ্রামে একটি চাকরিও পেয়েছিলেন। কাজে যোগ দিতে ১৬ জুন গুরুগ্রাম যাওয়ার ট্রেনের টিকিটও কাটা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু সাঁতার কাটতে গিয়ে এমন বিপর্যয় মানতে পারছেন না তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা। মঙ্গলবার তাঁদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, কেউই কার্যত কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।

সৌরীশ এবং রণিতের পরিবার সূত্রের খবর, দু’জনেই সাঁতার জানতেন। করোনার আগে তাঁরা নিয়মিত সাঁতার কাটতেন বলে দাবি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে পুকুরে যাওয়া নিয়ে সৌরীশের বাড়ির কেউ আপত্তি করেননি। ঘটনার দিন বিকেল ৫টা নাগাদ বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিন বন্ধু। পাটুলির আশাপূর্ণা ঝিলে তিন জন নামেন। তাঁরা বারকয়েক এ পার-ও পার করেন বলে স্থানীয়দের দাবি। এর পরে সৌরীশ জল থেকে উঠে আসেন। কিন্তু রণিত ও অরিন্দম তখনও পিছনে ছিলেন। হঠাৎই রণিতকে তলিয়ে যেতে দেখে ফের জলে ঝাঁপ দেন সৌরীশ। এর পরে অরিন্দম জল থেকে উঠে এলেও বাকি দু’জনে তলিয়ে যান বলে পরিবারের তরফে দাবি। সৌরীশের বাবা বিষ্ণু দাস বলেন, ‘‘চিকিৎসক বলেছিলেন, সাঁতার কাটলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই ও সাঁতার কাটতে যাচ্ছিল। সাবধানে সাঁতার কাটার কথা বলেছিলাম। কিন্তু এমন যে হবে, বুঝতে পারিনি।’’

Advertisement

তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রণিতের পরিবার। ঘটনার পরে সঙ্গে সঙ্গে ডুবুরি নামানো হয়নি বলে অভিযোগ। রণিতের দিদি লিজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বার বার পুলিশকে জলে ডুবুরি নামাতে বললেও শোনা হয়নি। এমনকি, ওদের জলে ডুবতে দেখে স্থানীয়েরাও কেউ সাহায্য করেননি।’’ সঙ্গে সঙ্গে কেউ জলে ঝাঁপ দিলে হয়তো দু’জনকে বাঁচানো যেত বলেই মনে করছেন রণিতের পরিজনেরা। যদিও পুলিশের দাবি, সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল তারা। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘খবর পেয়েই পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে। এমনকি, ডুবুরিও নামানো হয়। পুলিশই পরে দেহ দু’টি জল থেকে তোলে।’’ এ দিকে, এ দিন দেহ দু’টির ময়না তদন্ত করা হয়। এর পরে দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement