ধরা পড়া সেই শেয়াল। নিজস্ব চিত্র
শেয়ালের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে খাঁচা পেতেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের এপ্রন এলাকায়, অর্থাৎ যেখানে রানওয়েতে বিমান দাঁড়িয়ে থাকে, সেখানেই ১০টি খাঁচা রেখেছে বন দফতর। গত শুক্রবার সেই খাঁচায় ধরা পড়েছে একটি শেয়াল। জুলাই মাসে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার বিমানবন্দর চত্বরে থাকা শেয়াল ধরা পড়ল।
বিমানবন্দর চত্বরে শেয়ালের উপদ্রব কোনও নতুন ঘটনা নয়। এর আগে বেশ কয়েক বার এমনও ঘটেছে যে, শহরে নামার সময়ে রানওয়ের উপরে শেয়ালকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে মুখ ঘুরিয়ে আকাশে উড়ে গিয়েছে বিমান। কখনও আবার ওড়ার সময়ে বিমানচালক খেয়াল করেছেন, রানওয়ের আশেপাশেই খাবারের খোঁজে ঘোরাঘুরি করছে শেয়াল। অনেক সময়েই সেই দৃশ্য দেখে আকাশ থেকে বিমানচালক সাবধান করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য শনিবার বলেন, “গত বছর তামিলনাড়ু থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দলকে ডেকে আনা হয়েছিল। নারিমাড়ুয়া নামে সেই দল শেয়াল ধরায় পারদর্শী। তার পরে শেয়ালের উপদ্রব অনেকটা কমেছে।”
তবু তার পরেও যে বিমানবন্দর চত্বর ছেড়ে যায়নি শেয়ালেরা, এ দিন ফের তার প্রমাণ মিলেছে। শেয়ালকে ফাঁদে ফেলার জন্য প্রতিটি খাঁচার ভিতরে খাবারের টোপ রাখা থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ধূর্ত শেয়াল সেই খাবার খাঁচার বাইরে থেকেই সাবাড় করে পালিয়েছে। তবে বিমানবন্দরের অফিসারেরা মনে করছেন, এ দিনের ধরা পড়া শেয়ালটি হয়তো ততটা চালাক ছিল না, যে কারণে খাবার খেতে খাঁচার ভিতরে ঢুকেছিল। শেয়ালটিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, বন দফতরের আধিকারিকদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এখনও বিমানবন্দর চত্বরে, রানওয়ের পূর্ব প্রান্তে বড় বড় গর্তের মধ্যে বহাল তবিয়তে রয়েছে শেয়ালদের সংসার। খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে শেয়াল। তবে মাঝেমধ্যেই খাবারের লোভে তারা রানওয়ের কাছাকাছি চলে আসে। এক সময়ে বিমানবন্দর চত্বরে কুকুরেরও দেখা মিলত। তবে এখন এপ্রন এলাকায় কুকুরের উপদ্রব অনেকটা কম বলেই জানিয়েছেন কর্তারা। তবে শেয়াল কিন্তু কমছে না।
করোনা আবহে এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে উড়ান যাতায়াতের সংখ্যা অনেকটা কম। ফলে শেয়ালের সঙ্গে বিমানের মুখোমুখি সাক্ষাতের আশঙ্কাও অনেকটাই কম। তবে উড়ানের সংখ্যা বাড়তে শুরু করলে এবং সেই সঙ্গে যদি পাল্লা দিয়ে বিমানবন্দর চত্বরে শেয়ালের বংশবৃদ্ধি ঘটে, তা হলে ফের তামিলনাড়ুর বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া গতি নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।