—প্রতীকী চিত্র।
আনন্দপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছের জলাশয় থেকে উদ্ধার হল এক বৃদ্ধার মৃতদেহ। শনিবার ভোরের এই ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম সুমিত্রা ভুলা (৭৫)। তিনি আনন্দপুরের শ্রমিকপল্লি বস্তির বাসিন্দা। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওই বস্তিটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। সেই আগুনে ঘর পুড়েছিল ওই বৃদ্ধারও। এর পর থেকেই তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কিন্তু তার জেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন, নাকি অন্য কোনও ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, সেই রহস্য কাটেনি। আনন্দপুর থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার আগে এ ব্যাপারে কিছুই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আনন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের কাছেই শ্রমিকপল্লির বস্তি। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ এক আনাজ বিক্রেতা ওই জলাশয়ে বৃদ্ধাকে ভাসতে দেখে বস্তিতে গিয়ে খবর দেন। সেখান থেকে বৃদ্ধার ছেলে গৌরচন্দ্র ভুলা এবং তাঁর স্ত্রী মমতা ছুটে যান। এর পরে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে পাশের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর যায় আনন্দপুর থানায়। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গেলে দেখা গেল, পোড়া বস্তি এখনও একই ভাবে পড়ে রয়েছে। মৃতার ছেলে সেখানেই দেখিয়ে দেন তাঁর মায়ের ঘর। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সস্ত্রীক লক্ষ্মীকান্তপুরে থাকি। কিন্তু শুক্রবারই আমরা এখানে মায়ের কাছে এসেছিলাম। ঘর পুড়ে যাওয়ার পর থেকেই মা অবসাদে ভুগছিলেন। সারাক্ষণ সব পুড়ে গেল, সব শেষ হয়ে গেল বলতে থাকছিলেন! তার মধ্যেই এ দিন ভোরে এই ঘটনা।’’ মৃতার পুত্রবধূ বলেন, ‘‘যা গিয়েছে, তা নিয়ে ভেবে কিছু হওয়ার নেই— এ কথা বলে অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। শেষ পরিণতি যে এ রকম হবে, কে জানত!’’ কান্নায় ভেঙে পড়ে এর পরে মমতা বলেন,
‘‘নেতারা বলেছিলেন, ঘর বানিয়ে দেবেন। কিন্তু সেই ঘর আর মায়ের দেখা হল না।’’