—প্রতীকী চিত্র
ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা, কিংবা ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার ঘটনা আকছার ঘটছে। অচেনা নম্বর কিংবা অনলাইনে অজানা কোনও ওয়েবসাইট ব্যবহার করার আগে নিশ্চিত হতে বাসিন্দাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু সেই আবেদন যে মানুষের মধ্যে এখনও বহুল ভাবে প্রচারিত হয়নি ফের তার প্রমাণ মিলল সল্টলেকে একটি প্রতারণার ঘটনায়।
এ ক্ষেত্রে অবশ্য প্রতারণার ঘটনাটি অভিনব। দুর্ঘটনায় আহত পথকুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার প্রতারণার শিকার হলেন সল্টলেকের এক দম্পতি। ওই দম্পতি শুক্রবার রাতে বিধাননগর পুলিশের ফেসবুক পেজে ঘটনাটির কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। বিধাননগর পূর্ব থানাতেও তাঁরা একটি সাধারণ অভিযোগ নথিবদ্ধ করেছেন।
সল্টলেকের সিএল ব্লকের বাসিন্দা অনন্ত শ্রফ এবং তাঁর স্ত্রী তামান্না কানোরিয়া ফেসবুকে অভিযোগে জানান, ২৯ ডিসেম্বর তাঁরা দেখেন, বাড়ির সামনে একটি কুকুর গাড়ি চাপা পড়েছে। তাঁরা দ্রুত কুকুরটিকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য চিকিৎসক ও হাসপাতালের খোঁজ করতে শুরু করেন। অনলাইনে একটি সংস্থার নম্বর পেয়ে তিনি সেখানে যোগাযোগ করেন।
অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, তাঁরা কুকুরের চিকিৎসা করাবেন। এর জন্য তাঁরা রিকভারি ভ্যান পাঠিয়ে কুকুরটিকে নিয়ে যাবেন। তার জন্য দম্পতিকে তাঁরা একটি লিঙ্ক পাঠান। সেটির মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে দশ টাকা জমা দিতে বলা হয়।
দম্পতি কুকুরটিকে বাঁচানোর কথা ভেবে সেই সংস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ না নিয়েই ওই লিঙ্কের মাধ্যমে দশ টাকা জমা করেন। কিন্তু অভিযোগ, লিঙ্কে ক্লিক করার পরে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য চাওয়া হয়। দম্পতি সেই তথ্য জমা করেন। এর পরেই দেখা যায়, তাঁদের একটি পেটিএম অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯৭ হাজার টাকা সরানো হয়েছে।
আনন্দ শ্রফ পুলিশের ফেসবুকেই জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। ফলে ব্যবসার শুরুর মুখে এই বিপুল পরিমাণ টাকা চলে যাওয়ায় তাঁরা আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন। শনিবার তামান্না জানান, এই ডামাডোলে কুকুরটির মৃত্যু হয়।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তাঁরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করবে। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, প্রতারকেরা নানা কায়দায় অপরাধ সংঘটিত করছে। বিশেষত সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে দুষ্কৃতীরা। এ ক্ষেত্রে তারা পশু চিকিৎসার নামেও প্রতারণার ঘটনা ঘটাল।