—প্রতীকী ছবি।
যত জট যেন জোকা মেট্রোতেই!
চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে জোকা মেট্রোর পরিষেবা তারাতলা ছাড়িয়ে মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। কাজ শুরুর তোড়জোড় চলছে পরবর্তী ভূগর্ভস্থ অংশের জন্য। তার মধ্যেই এই মেট্রোর এসপ্লানেড স্টেশন তৈরি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সেনার আপত্তির জেরে বিধান মার্কেট এলাকায় জোকা মেট্রোর প্রস্তাবিত স্টেশন তৈরি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেখানে স্টেশন তৈরি করা না গেলে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত এসেই থেমে যেতে হতে পারে এই মেট্রোকে। তাতে এসপ্লানেড স্টেশনকে কেন্দ্র করে পরিবহণ হাব গড়ে তোলার ভাবনাও বড়সড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। শুক্রবার পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো রেল ভবনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি জানান, অতি সম্প্রতি এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সেনা কর্তৃপক্ষ ময়দান মার্কেটের জায়গায় স্টেশন তৈরির ক্ষেত্রে আপত্তির কথা জানিয়েছেন। সমস্যার সমাধান কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’’
শুরুর দিকে এই মেট্রো জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো হিসাবে পরিচিত ছিল। পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গতিপথ এসপ্লানেড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সময়ে জোকা মেট্রোকেও এসপ্লানেড পর্যন্ত আনার সিদ্ধান্ত হয়। সেই কারণে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ছাড়াও উত্তর-দক্ষিণ এবং জোকা মেট্রোর গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হিসাবে এসপ্লানেড স্টেশনটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো অবশিষ্ট ৬.৪ কিলোমিটার মেট্রোপথের কাজ শুরু করার জন্য বরাত প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ হয়। মাসকয়েক আগে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন স্কাইওয়াক ভাঙা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরে জোকা মেট্রোর প্রয়োজনে বডিগার্ড লাইন্সের জমির একাংশ ব্যবহার করতে দেওয়া নিয়েও আপত্তি তোলেন তিনি। সেই বিতর্ক আবার নতুন করে মাথাচাড়া না দিলেও সম্প্রতি এসপ্লানেড স্টেশন নির্মাণ নিয়ে সেনার আপত্তি এই মেট্রোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে দিয়েছে।
এসপ্লানেডে তিনটি মেট্রোর সংযোগস্থল তৈরিকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে বাসের সংখ্যাও কমিয়ে আনতে তৎপর হয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। পাশাপাশি, এসপ্লানেড স্টেশন তৈরির জন্য বিধান মার্কেট থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে কার্জন পার্কে তাঁদের নতুন বাজার তৈরি করে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেনার আপত্তিতে গোটা পরিকল্পনাই আটকে যাওয়ার মুখে। ২০২৮ সালে জোকা মেট্রোর কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হলেও তা পূরণ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ দিন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর হাওড়া স্টেশনে রেল এবং মেট্রোর যাত্রীদের মসৃণ যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে প্রস্তাবিত সাবওয়ে নির্মাণের বিভিন্ন খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কুমার দেউস্কর এবং পি উদয়কুমার রেড্ডি। বিকেলে মেট্রো রেল ভবনে কলকাতা মেট্রোর অ্যাপ অ্যাপলের ফোনে চালু হওয়ার কথাও জানান তিনি।