একটি বারান্দার গ্রিল বেয়ে উপর থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হল দু’বছরের এক শিশুর। প্রতীকী ছবি।
কলকাতা শহরে এমন অনেক আবাসন আছে, যেগুলির বারান্দা গ্রিল দিয়ে সম্পূর্ণ ঘেরা নয়। তেমনই একটি বারান্দার গ্রিল বেয়ে উপর থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হল দু’বছরের এক শিশুর। বুধবার বিকেলে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ইকো পার্ক থানা এলাকার চিনার পার্কের একটি আবাসনে। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত আবাসনের বাসিন্দারা। শোকস্তব্ধ শিশুটির বাবা-মা।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির নাম সুস্মিত বিশ্বাস। তার বাবা শুভেন্দু বিশ্বাস পেশায় ব্যবসায়ী। আবাসিকেরা জানান, মাস ছয়েক আগে ওই পরিবারটি ফ্ল্যাট কিনে এসেছে। ওই আবাসনের ছ’নম্বর ব্লকের ছ’তলার ফ্ল্যাটে থাকে তারা। শিশুটি কী ভাবে পড়ে গেল, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। তবে, পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, ঘটনার সময়ে সুস্মিতের মা রান্না করছিলেন। বাবাও বাড়িতে ছিলেন না। শিশুটি বারান্দায় খেলছিল। খেলতে খেলতে কোনও ভাবে সে বারান্দার রেলিং টপকে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। পরে ভিআইপি রোডের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সুস্মিতকে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বারান্দার গ্রিল টপকে শিশুটির পড়ে যাওয়াটাই ভাবাচ্ছে বাসিন্দাদের। আবাসন কমিটি সূত্রের খবর, শুভেন্দুদের ফ্ল্যাটের গোটা বারান্দা গ্রিল দিয়ে ঘেরা ছিল না। বারান্দার অর্ধেক অংশে গ্রিল ছিল। বাসিন্দাদের অনুমান, শিশুটি খেলা করতে করতে ওই গ্রিল বেয়ে উপরে উঠে নীচে পড়ে যায়। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওঁদের ফ্ল্যাটের বারান্দা পুরোটা লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরা নয়। আমাদের অনুমান, বাচ্চাটি গ্রিল বেয়ে উপরে উঠে রেলিং টপকে নীচে পড়ে গিয়েছে। কারণ, লোহার গ্রিলের মধ্যে এতটা ফাঁক নেই যে, তার মধ্যে দিয়ে শিশুটি গলে নীচে পড়ে যাবে।’’
আবাসনের আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘একটি শিশুর এমন পরিণতির কথা ভাবতেও পারছি না। একটি বাচ্চা ওই ভাবে লোহার গ্রিল বেয়ে উপরে উঠতে পারে, সেটা তো সচরাচর কারও ধারণায় আসারই কথা নয়।’’ তাঁরা জানান, আবাসনের অন্য সব ফ্ল্যাটের বারান্দায় গ্রিল দেওয়া থাকলেও, ব্যতিক্রম ছিল শুভেন্দুদের ফ্ল্যাটটি। তবে তিনিও বারান্দা পুরো গ্রিল দিয়ে ঘেরার চিন্তাভাবনা করছিলেন। তারই মধ্যে ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা।
আবাসন সূত্রের খবর, শিশুটি দম্পতির একমাত্র সন্তান। আচমকা এমন ঘটনায় পরিবারের লোকজন কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। ঘটনা প্রসঙ্গে শিশুটির পরিবারের কেউই কথা বলতে চাননি।