—প্রতীকী চিত্র।
বেসরকারি খাদ্য সরবরাহ সংস্থার এক কর্মীর ভোটার ও প্যান কার্ড ব্যবহার করে তাঁর নামে ভুয়ো সংস্থা খোলা হয়েছিল। ওই সংস্থার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা লেনদেন করার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক ব্যক্তি। ধৃতের নাম সুরজিৎ দত্ত। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সুরজিৎকে বুধবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে ধরে লিলুয়া থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে হাওড়া আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, লিলুয়ার চামরাইলের বাসিন্দা এক যুবকের নামে ভুয়ো সংস্থা খুলে ৯ কোটি টাকার লেনদেন ও প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা মুনাফা করেছে পঞ্চাশোর্ধ্ব সুরজিৎ। কী ভাবে সে এই কাজ করল, তা ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এর আগেও আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত হয়েছিল সুরজিৎ। কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল। ফের একই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে।
চামরাইলের বাসিন্দা এবং বেসরকারি খাদ্য সরবরাহ সংস্থার এক ডেলিভারি বয় শৌভিক ঘোষ ২০২২-এর ডিসেম্বরে তাঁর পরিচিত এক হিসাবরক্ষকের কাছে ২০২১-’২২ সালের আয়কর রিটার্নের ফাইল তৈরির জন্য ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড জমা দেন। কয়েক দিন পরে তিনি জানতে পারেন, এর আগেই তাঁর ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে ও তাঁর নামে একটি সংস্থা রয়েছে। সেই সংস্থা এক বছরে কয়েক কোটি টাকা লেনদেনও করেছে। শৌভিক আরও জানতে পারেন, তাঁর নামে চলা সংস্থার ব্যালান্স শিটে প্রায় ৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে! ১৪ লক্ষ টাকার বেশি মুনাফা দেখানো হয়েছে! তাঁর নামে দু’টি ব্যাঙ্কে দু’টি অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে। এ জন্য তাঁকে আয়কর জমা দিতে নথিও পাঠানো হয়েছে। এর পরেই গত ফেব্রুয়ারিতে ওই যুবক লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি জানান, বেসরকারি সংস্থার হয়ে ডেলিভারি বয়ের কাজ করলেও তাঁর অজানতে তাঁর নামে সংস্থা চলছে। তাঁর পক্ষে সংস্থা খোলা সম্ভবই নয়।
তদন্তে নেমে তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে লিলুয়া থানার পুলিশ সুরজিৎকে গ্রেফতার করে। এর আগে প্রতারণার মামলায় সুরজিৎকে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করার পরে তার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছিল। তার পরেও সে কী ভাবে এই ধরনের ভুয়ো সংস্থা খুলে ফের প্রতারণা করছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি তদন্ত করে দেখা হবে, কোন সূত্রে শৌভিকের প্যান ও ভোটার কার্ড সুরজিতের হাতে পৌঁছেছিল।