প্রতীকী চিত্র।
হৃদ্রোগের সমস্যায় ভোগা বৃদ্ধ বাবাকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করাতে এসেছিলেন ছেলে, বৌমা-সহ পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু দু’টি হাসপাতাল ঘুরেও শয্যা না পাওয়ায় সেই অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। ফেরার পথে ঘটল দুর্ঘটনা। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ডি এল খান রোড এবং এ জে সি বসু রোডের সংযোগস্থলে একটি বেসরকারি বাস ওই অ্যাম্বুল্যান্সে ধাক্কা মারলে মৃত্যু হয় নুরুল হক মোল্লা (৭৫) নামে ওই রোগীর। আহত হয়েছেন তাঁর ছেলে, বৌমা এবং আরও দুই আত্মীয়। বৃদ্ধের ছেলে নুরউদ্দিন মোল্লা হাওড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি। অন্য দিকে, নুরুলের বৌমার এক আত্মীয় বাবাই কাজি ভর্তি এসএকেএমে।
নুরুলের বৌমা রোজিনা বিবি মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সম্প্রতি শ্বশুরমশাই কাশ্মীর ঘুরতে গিয়েছিলেন। ফেরার পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রথমে ওঁকে নাদিয়ালের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করি। রবিবার বাড়ি আসার পরে ফের অসুস্থ বোধ করেন তিনি। সে দিনই চিকিৎসককে দেখিয়ে এসএসএসকেএমে ভর্তি করার পরিকল্পনা নিই। সেই মতো সোমবার দুপুরে হাসপাতালের পথে রওনা দিয়েছিলাম।’’ তিনি জানান, এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা নুরুলকে পরীক্ষা করে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু শয্যা না থাকায় বৃদ্ধকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। সেখানেও শয্যা মেলেনি। শেষে রাতে বাড়ির পথে রওনা হন তাঁরা। রোজিনার কথায়, ‘‘ঠিক ছিল, মঙ্গলবার সকালে শ্বশুরমশাইকে এসএসকেএমে ভর্তি করাব। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’
পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সটি এ জে সি বসু উড়ালপুল হয়ে খিদিরপুরের দিকে যাচ্ছিল। এ জে সি বসু রোড এবং ডি এল খান রোডের মোড়ে একটি বেসরকারি বাস সেটির পেট বরাবর ধাক্কা মারে। অ্যাম্বুল্যান্স চালকের পাশের আসনে বসেছিলেন রোজিনা। ধাক্কার অভিঘাতে দরজা খুলে যাওয়ায় তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। রোজিনার কথায়, ‘‘জ্ঞান ফিরলে দেখি, আমার চোখে-মুখে জল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। সব চেয়ে বেশি চোট পান শ্বশুরমশাই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই পালায় বাসচালক। তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া গতিতে বাস চালানো, অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।