বিপত্তি: বৃষ্টিতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে এই বাড়িটি। ঘটনাস্থলে এসেছে পুলিশ ও দমকল বাহিনী। বৃহস্পতিবার, বিধাননগরের অশ্বিনীনগরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
বিধাননগর পুর এলাকার অশ্বিনীনগরের নজরুল পার্কে বৃষ্টির রাতে ধসে পড়ল বাড়ি। বৃহস্পতিবারের ঘটনা। ধ্বংসস্তূপে ওই বাড়ির এক বাসিন্দার চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে, বাড়ির অন্য দুই বাসিন্দা সুরক্ষিত রয়েছেন। বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, তিন জন ওই বাড়িটিতে থাকতেন। রাতেই ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে আটকে পড়া বাসিন্দাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এ দিন রাতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে তেতলা বাড়িটি। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। রটে যায়, একাধিক মানুষ বাড়িটির নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাগুইআটি থানার পুলিশ ও দমকল। রাতেই অকুস্থলে গিয়ে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজ শুরু করে বিধাননগর পুরসভা। স্থানীয়েরা জানান, বাড়িটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল।
পুলিশ জানায়, বাড়িটিতে থাকতেন এক প্রৌঢ়া ও তাঁর দুই ছেলে। মেজো ছেলে ও প্রৌঢ়া ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। ফলে, তাঁদের কিছু হয়নি। তবে ওই পরিবারের ছোট ছেলের খোঁজ মিলছে না বলেই জেনেছে পুলিশ। পরিবারটির আশঙ্কা, ছোট ছেলে বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন।
ওই পরিবারটির মেজো ছেলে কিশোর মণ্ডল জানান, তাঁর এক দাদা পুরুলিয়ায় চাকরি করেন। কিশোর জানান, তাঁর ভাই ধ্রুবজ্যোতির খোঁজ মিলছে না। কিশোরের আশঙ্কা, ধ্রুবজ্যোতি হয়তো ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি ভেঙে পড়ে। আমি এবং মা একটু কাজে বেরিয়েছিলাম। বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে ছুটে আসি। ভাইকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। আমি কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই।’’
ওই বাড়ির নীচে একটি বন্ধ রেশন দোকান রয়েছে। বাড়ি ভেঙে পড়লেও সেটির বিশেষ ক্ষতি হয়নি। কিশোরের বাবা, প্রয়াত নির্মল মণ্ডল জীবিত থাকা অবস্থায় ওই রেশন দোকানটি চালাতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে দোকানটি বন্ধ হয়ে যায় বলেই স্থানীয়েরা জানান। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কিশোরের মা প্রতিমা মণ্ডল আশাকর্মী। স্থানীয়দের একাংশ জানান, পরিবারটি একেবারেই আর্থিক ভাবে সচ্ছল নয়। যে কারণে বাড়িটি দীর্ঘ কাল সংস্কার করা হয়নি। বাড়ির দেওয়াল থেকে গাছও গজিয়ে গিয়েছে।
এই দুর্ঘটনার পরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিধাননগর পুরসভার এক আধিকারিক জানান, বাড়িটির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কলকাতায় পুরনো বাড়ি ধসে মৃত্যুর ঘটনা একাধিক ঘটলেও, বিধাননগরে এমন দুর্ঘটনা সম্প্রতি শোনা যায়নি।