পরিবেশ দিবসে চারা বিলি চাকরিপ্রার্থীদের। সোমবার, মেয়ো রোডে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
ধর্নার ৮১৩ দিন। তীব্র গরমেও যার কোনও ব্যতিক্রম নেই। এত দিন ধরে ময়দানের কাছে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে থাকতে থাকতে ওঁদের মনে হয়েছিল, রাস্তার পাশে আরও কিছু গাছ থাকলে মন্দ হত না। সেইভাবনা থেকেই সোমবার, পরিবেশ দিবসে মেয়ো রোডের আশপাশে গাছের চারা রোপণ করলেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, মেহগনির মতো গাছের প্রায় ৬০টি চারাপুঁতেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের মধ্য়ে বিলিয়েছেন ৮১৩টি চারা।
৮১৩টি চারা কেন? নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা জানালেন, প্রেস ক্লাব, করুণাময়ী এবং মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ— সব মিলিয়ে তাঁদের ধর্না-বিক্ষোভ এ দিন ৮১৩ দিনে পড়ল। তারইপ্রতীক হিসাবে ৮১৩টি চারা বিতরণ। এক চাকরিপ্রার্থী অভিষেক সেন বললেন, ‘‘গত দু’মাস ধরে মেয়ো রোডের ধারে বসে বিশ্ব উষ্ণায়ন যেন আরও বেশি করে টের পাচ্ছি। গাছ লাগানো যে কতটা প্রয়োজন, তা বুঝতে পারি। বঞ্চিত হলেও,আমরাই তো ভবিষ্যতের যোগ্য শিক্ষক। তাই পরিবেশের প্রতি আমাদেরও একটা দায়িত্ববোধ রয়েছে। তা থেকেই আজকের এই বৃক্ষরোপণ এবং চারা বিতরণ।’’ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী আবার জানালেন, ভবিষ্যতে এই চারাগুলি যখন বড় হবে, তখন সেগুলি দেখে তাঁদের মনে পড়বে আন্দোলনের এই দিনগুলির কথা।
গান্ধী মূর্তির কাছেই মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে বসে বিক্ষোভ আন্দোলন করছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেনএসএসসি-র গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা। এ দিন তাঁরাও গাছের চারা বিতরণ করেন। তাঁরা জানান, বীরভূম, মালদহ, পূর্ব বর্ধমান-সহ রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই সকাল থেকে চাকরিপ্রার্থীরা চারা বিতরণ করেছেন। কলকাতায় তাঁদের মঞ্চ থেকেও বিতরণ করা হয়েছে বহু চারা। এক চাকরিপ্রার্থী অষ্টপদ শাসমলের কথায়, ‘‘গাছ কাটার মাধ্যমে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। একই রকম ভাবে নিয়োগ-দুর্নীতির বিষবাষ্প যে ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে মানবসমাজ আজ ধংসের মুখে। তাই আজকের বার্তা— বিশ্বকে সবুজ করে সভ্যতাকে বাঁচান, আর নিয়োগ-দুর্নীতির মূলে কুঠারাঘাত করে মানব সমাজকে রক্ষা করুন।আমাদের হকের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’